ঢাকা, বুধবার, ১৬ ডিসেম্বর-২০২০ : জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, সরকার করোনা প্রতিরোধে তিন কোটি ভ্যাকসিন বুকিং দিয়েছে। কিন্তু দেশের মানুষ জানেনা তিন কোটি টিকা তিন কোটি মানুষ পাবেন নাকি দেড় কোটি মানুষ দুটি করে টিকা পাবেন। তিনি বলেন, দেশের বাকি ১৪ থেকে ১৫ কোটি মানুষ কিভাবে টিকা পাবেন তা সরকারকেই পরিস্কার করতে হবে। নকল টিকায় যেন সয়লাব না হয়, ভ্যাকসিন নিয়ে যেন কোন প্রতারণা না হয় সেজন্য সরকারকে সজাগ থাকতে আহবান জানান তিনি। বলেন, করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে কোন মহল যেন বাণিজ্য করতে না পারে সেজন্য সচেষ্ট থাকতে হবে। জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, বিশে^র অন্যতম ধনী দেশ যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা দিয়েছে তারা তাদের দেশের মানুষকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন সরবরাহ করবে। এমন বাস্তবতায় আমাদের দেশের ৯০ ভাগ মানুষ পয়সা খরচ করে টিকা নিতে পারবেনা। তাই দেশের সাধারণ মানুষকে বাঁচাতে বিনামূল্যে টিকা সরবরাহ করতে হবে। টিকা সংরক্ষণ ও পরিবহনের জন্য সার্বিক প্রস্তুতি নিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানান তিনি।

আজ দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান-এর বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টি আয়োজিত আলোচনা সভা ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের এ কথা বলেন।

জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির আহবায়ক শেরিফা কাদের এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, শোষণ, বৈষম্য, জুলুম আর নির্যাতন থেকে মুক্তি পেতে আমাদের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ সংগঠিত হয়েছিলো। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, দেশের মানুষ কী স্বাধীনতার সুফল ভোগ করতে পেরেছেন? তিনি বলেন, ৭মার্চ বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম”। গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধু মুক্তির জন্য স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন। আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি কিন্তু মুক্তি পাইনি। এখনো সমাজে বৈষম্য ও বঞ্চনা বিদ্যমান। তিনি বলেন, ৯১ পরবর্তী সরকারগুলোর শাসনামলে সরকারী দল না করলে চাকরি মেলেনা, ব্যবসা মেলেনা, অন্যায় করলে বিচারের মুখোমুখি হতে হয়না। সুশাসন ও আইনের শাসনের অভাবে সবার জন্য সমানভাবে আইন প্রয়োগ হয়না। অথচ পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এর শাসনামলে সামাজিক বৈষম্য ছিলনা, জীবনের নিরাপত্তার অভাব ছিলনা। সরকারী কর্মকর্তারা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পেরেছেন। চাকরী, ব্যবসা ও আইনের চোখে সবাই সমান ছিলো। কোন দলবাজী ছিলনা পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নয় বছরের শাসনামলে। পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ স্বাধীনতার স্বাদ গণমানুষের দ্বারপ্রান্তে পৌছে দিতে কাজ করেছেন। আমরা পল্লীবন্ধর আদর্শে নতুন বাংলাদেশ গড়ে স্বাধীনতার সুফল গণমানুষের মাঝে পৌছে দেবো। শোষন, বঞ্চনা থেকে মুক্তি দিতেই জাতীয় পার্টির রাজনীতি।

এসময় জাতীয় পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, দেশের মানুষ স্বাধীনতার সুফল পায়নি। এখনো মানুষের বাক স্বাধীনতা নেই, সংবাদ পত্রের স্বাধীনতা নেই। বলেন আমরা প্রাণ খুলে কথা বলতে চাই, আমাদের কষ্ট আর না পাওয়ার কথা নির্ভয়ে বলতে চাই। এখন কথা বলতে গেলে ভাবতে হয়, রাজনীতি করতে ভাবতে হয়। স্বাধীন দেশে নির্ভয়ে কথা বলার জন্য ৭০-৭১ সালের মত রাজপথে নামতে হবে। তিনি বলেন, আমারা পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এর আদর্শে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, দলবাজ এবং বৈষম্য মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে রাজনীতি করছি।

এসময় জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, প্রতিহিংসার রাজনীতি পরিহার করে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার সুসংহত করতেই পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ কাজ করেছেন। আমরা সকল বাঁধা বিপত্তি উপক্ষো করে পল্লীবন্ধুর আদর্শ নিয়ে এগিয়ে যাবো। গণমানুষের আশা আকাংখা পূরণ করতেই জাতীয় পার্টির রাজনীতি। কোন ষড়যন্ত্র জাতীয় পার্টির ঐক্যে ফাটল ধরাতে পারবেনা।

কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি বলেন, ৩০ লাখ শহীদের রক্ত আর ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে পল্লীবন্ধুর কল্যাণময় কর্মসূচি উজ্জল হয়ে আছে। তিনি বলেন, আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে বাংলাদেশে কাজ করলে রাষ্ট্র ক্ষমতা বেশি দূরে নয়। পল্লীবন্ধুর নতুন বাংলাদেশ গড়ার মাধ্যমে আমরা সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করবো।

জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির আহ্বায়ক ও চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা শেরিফা কাদের-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির কো- চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা, মীর আব্দুস সবুর আসুদ। সভা পরিচালনা করেন- জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির সদস্য সচিব আলাউদ্দিন আহমেদ।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য এটিইউ তাজ রহমান, এড. মোঃ রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, নাজমা আক্তার, আলমগীর সিকদার লোটন। এমরান হোসেন মিয়া, জহিরুল ইসলাম জহির, সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য আতিকুর রহমান আতিক। উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য রওশন আরা মান্নান এমপি, ড. নুরুল আজহার, এম.এ. কুদ্দুস খান, মাহমুদুর রহমান মাহমুদ, জহিরুল আলম রুবেল, মেহেরুন্নেসা খান হেনা পন্নি, হারুন আর রশীদ, ভাইস চেয়ারম্যান- আহসান আদেলুর রহমান এমপি, শেখ আলমগীর হোসেন, এম.এ. মুনিম চৌধুরী বাবু, সালমা হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু, ইকবাল হোসেন তাপস, ফকরুল আহসান শাহজাদা, মোঃ বেলাল হোসেন, আমির হোসেন ভূঁইয়া, সাবেক যুগ্ম মহাসচিব সালাউদ্দিন আহমেদ মুক্তি, সাংগঠনিক সম্পাদক নির্মল দাস, মোঃ হেলাল উদ্দিন, সৈয়দ মঞ্জুর হোসেন মঞ্জু, এনাম জয়নাল আবেদিন, সৈয়দ ইফতেকার আহসান হাসান, মাখন সরকার, আনোয়ার হোসেন তোতা, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য- সুলতান মাহমুদ, এম.এ. রাজ্জাক খান, জহিরুল ইসলাম মিন্টু, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসহাক ভূঁইয়া, মিজানুর রহমান মিরু, যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল হক নুরু, জাকির হোসেন মৃধা, শারমিন পারভীন লিজা, যুগ্ম সম্পাদমন্ডলীর সদস্য মাহমুদ আলম, ডা. সেলিমা খান, মীর সামসুল আলম লিপ্টন, ডা. মোঃ আব্দুল্লাহ আল ফাত্তাহ, কেন্দ্রীয় নেতা সামসুল হুদা, শেখ মোঃ মাসুদ, কলিমুল্লাহ, জিয়াউর রহমান বিপুল, ফারুক শেঠ, সরোয়ার হোসেন, মিনি খান, ওয়াহিদুর রহমান ওয়াহিদ, তাসলিমা আক্তার রুনা, আবুল কাশেম, মোমেনা বেগম, মোতাহার হোসেন মানিক, হিমেল, হাসনা হেনা, জয়নাল আবেদিন, এম. মহিবুর রহমান, জহিরুল ইসলাম মিন্টু, সোলায়মান সামি, জাতীয় ছাত্র সমাজ-এর সভাপতি ইব্রাহিম খান জুয়েল, সাধারণ সম্পাদক আল মামুন, তরুন পার্টির সদস্য সচিব মোড়ল জিয়াউর রহমান।

এর আগে সকাল সাড়ে ৯টায় জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপার নেতৃত্বে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের পক্ষে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুস্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য এটিইউ তাজ রহমান, এ্যাড. মোঃ রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, নাজমা আক্তার এমপি, এমরান হোসেন মিয়া, জহিরুল ইসলাম জহির, উপদেষ্টা- জহিরুল আলম রুবেল, ভাইস চেয়ারম্যান শেখ আলমগীর হোসেন, সালমা হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু, ফকরুল আহসান শাহজাদা, মোঃ বেলাল হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ হেলাল উদ্দিন, দফতর সম্পাদক-২ এম.এ. রাজ্জাক খান, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য আজহার সরকার, যুগ্ম সাংগঠনিক আক্তার হোসেন, এম.এ. সুবহান, আবু সাদেক বাদল, কেন্দ্রীয় নেতা ফারুক শেঠ, জিয়াউর রহমান বিপুল, ছাত্র সমাজ-এর সাধারণ আল মামুন।