পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় প্রাথমকি বিদ্যালয়ের ছাদ ভেঙে নির্মাণকাজ ফেলে রাখায় খোলা আকাশের নিচে চলছে পাঠদান। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
উপজেলার দাউদখালী ইউপির নিভৃত গ্রামের পশ্চিম চালিতাবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে। ১৯৮২ সালে ৩৪ শতাংশ জমিতে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে ১৩৩ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। ২৫ বছর আগে একটি অফিস কক্ষ ও তিনটি শ্রেণি কক্ষের একতলা পাকা ভবনটি নির্মাণ করা হয়।
নির্মাণের এক বছরের মধ্যে জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে। ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় সিডরে ভবনটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর থেকে বিদ্যালয়টিতে পাঠ পরিবেশ বিঘ্নিত হয়। ছাদ ও পলেস্তারা খসে পড়তে শুরু করলে প্রাণহানির ভয়ে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা চরম আতংকের মধ্যে পড়ে।
এরইমধ্যে বিদ্যালয়ের ছাদ অপসারণ করে টিনের ছাউনি নির্মাণে সরকারিভাবে দুই লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। বিদ্যালয়ের সভাপতি হাফিজুর রহমান হায়দার নিজেই সংস্কার কাজ শুরু করেন। দেড় মাস আগে বিদ্যালয়ের পুরো ছাদ ভেঙে নির্মাণকাজ ফেলে রাখেন।
এদিকে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে ভাঙা ছাদের ইট, রড আর খোয়া বিক্রির অভিযোগ ওঠে ।
বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী জান্নাতি আক্তার জানায়, আমাগো স্কুলে ছাদ নাই, স্কুল ভবন ভাঙা, বারান্দায় খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করা যায় না। আমাগো নতুন স্কুল ভবন চাই।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিধান চন্দ্র হালদার বলেন, বিদ্যালয়ের ছাদ ভাঙার পর বিকল্প পাঠদানের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়ে খোলা আকাশের নিচে পাঠদান করতে হচ্ছে।
বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হাফিজুর রহমান হায়দার বলেন, ছাদ ভেঙে মালামাল বিক্রির অভিযোগ সত্য নয়। স্কুলের ছাদ ভাঙার পর বরাদ্দের টাকা না পাওয়া ও ঝড়-বৃষ্টির কারণে টিনের ছাউনি নির্মাণে দেরি হচ্ছে।
উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ছাদটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছিল। ছাদ ভেঙে টিনের ছাউনির কাঠামো দিয়ে সংস্কারে দুই লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। রমজান মাসের মধ্যে স্কুলের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের সংস্কারের কাজ শেষ করার কথা। কিন্তু বরাদ্দের টাকা ছাড় না হওয়ায় তারা সংস্কার কাজ করতে পারেননি। ছাদ ভেঙে ফেলায় শিক্ষার্থীরা দুর্ভোগে পড়েছে।
তিনি বলেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে টিনের ছাউনির কাঠামো নির্মাণের জন্য সভাপতি ও প্রধান শিক্ষককে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া ভাঙা ছাদের মালামাল একদিনের মধ্যে স্কুলে সংরক্ষণ করতেও বলা হয়েছে।
Array