• ঢাকা, বাংলাদেশ

মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ কিংবা একজন আনসাং হিরো! 

 admin 
24th Jan 2019 10:34 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

 ‘সাইলেন্ট ওয়ারিয়র’, ‘সিক্রেট সুপারস্টার’, ‘আনসাং হিরো’ ; কোন হলিউড সিনেমার নাম না। এগুলো একজন ক্রিকেটারের গায়ে লেগে যাওয়া ‘ট্যাগ’ এর নাম ! একজন ক্রিকেট তারকার অদেখা পদবী। অতিমানবীয় কিছু করেও ঢাকা পড়ে যান কারো না কারোও ছায়ায়। লাইমলাইটে আসার আগেই অন্য কেউ ঢুকে পড়ে তার স্থানে। বাংলাদেশ ক্রিকেটকে যিনি অনেকবার আনন্দের বন্যায় ভাসিয়েছেন। কিন্তু বলার মতো আলোচনায় আসতে পারেননি। এতক্ষণে নিশ্চয় আন্দাজ করতে পেরেছেন, কে সেই সিক্রেট সুপারস্টার? হ্যাঁ, বলছি মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের কথা।

যার নামের পাশে নায়ক শব্দটি একেবারেই বেমানান! পার্শ্ব-নায়ক হয়েই ক্যারিয়ারের পুরোটা সময় কাটিয়ে আসছেন। মেধা, কঠোর পরিশ্রম আর সরলতা যার ভূষণ! পেছনের কথা দূরে ঠেলে বাংলাদেশ ক্রিকেটকে সার্ভিস দেওয়াকে যিনি ব্রত হিসেবে নিয়েছেন তার নাম মাহমুদুল্লাহ। প্রায় এক যুগের ক্যারিয়ারে বাংলাদেশের অনেক বড় জয়ের নেপথ্যে ছিলেন মাহমুদুল্লাহ। তারপরও তার নায়ক হওয়া হয়ে উঠেনি। অথচ কি দারুণ ক্রীড়া নৈপুণ্যই না প্রদর্শন করতে পারেন এই মাল্টি স্কিল্ড ক্রিকেটার! ব্যাট হাতে কখনো প্রতিপক্ষের প্রাচীর হয়ে দাঁড়ানো, হঠাৎ করেই বোলিংয়ে এসে উইকেট তুলে নেয়া। কিংবা নিরলস ফিল্ডিং। এই তিনের এক অদ্ভুত মিশেল রয়েছে মাহমুদুল্লাহর মধ্যে।

মূল ব্যাটসম্যান না হয়েও মাঝে মাঝে রান তোলার দায়িত্ব নিয়ে নেন এই ক্রিকেটার। অথচ মাহমুদুল্লাহর নির্দিষ্ট কোন ব্যাটিং পজিশন নেই! ব্যাটিংয়ে মাহমুদুল্লাহ কতটা পারদর্শী, অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপ, চ্যাম্পিয়নস ট্রফি এবং গতবছর শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত নিদাহাস ট্রফিতে দেখেছে বাংলাদেশ। ত্রিদেশীয় সে সিরিজে শ্রীলঙ্কাকে একাই হারিয়ে দিয়েছিলেন রিয়াদ। ভাগ্য দেবতার নির্মম পরিহাসে শিরোপা হাতছাড়া হয়েছিলো বটে; কিন্তু নিজের উপর বর্তানো কাজটি করতে কার্পণ্যতা করেননি এই ক্রিকেটার। শুধু কি নিদাহাস ট্রফি? দলের বিপর্যয়ে নিয়মিতভাবে ইনিংস মেরামতের কাজ করে চলেছেন এই ক্রিকেটের ‘প্লে মেকার’! সোজা বাংলায় বলতে গেলে মিডল অর্ডারের গুরুদায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন রিয়াদ।

গতবছর বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি সূচিতে থাকা প্রায় সবগুলো ম্যাচেই ভালো করেছেন তিনি। ১৬ টি-টোয়েন্টিতে ১৩৮ স্ট্রাইক রেটে ৪১৪ রান করে সবার উপরে মাহমুদুল্লাহ। অকেশনাল বোলার হিসেবে বল করতে এসে ৯টি উইকেট নিয়েছেন এই অফ স্পিনার। বড় মঞ্চে মাহমুদুল্লাহর ক্রীড়াশৈলী দেখেছে পুরো ক্রিকেট বিশ্ব। ২০১৫ বিশ্বকাপে প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে তিন অংক ছুঁয়েছেন। বাংলাদেশ ক্রিকেটের বড় বিজ্ঞাপন বনে যাওয়া ক্রিকেটাররা যেখানে ব্যর্থ হয়েছেন, মাহমুদুল্লাহ সেখানে পরপর সেঞ্চুরি করে উদযাপন সেরেছেন! লাল সবুজের পতাকা বিশ্ব দরবারে মেলে ধরেছেন এই সিক্রেট সুপারস্টার। আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে সাকিব-মাহমুদুল্লার মহাকাব্যিক জুটির কথা ভুলে যাওয়ার নয়। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টাইগারদের অনবদ্য পারফর্মেন্স বাংলাদেশকে প্রথমবারের মতো পৌঁছে দিয়েছিলো সেমিফাইনালে।

তারপরও ফ্লাড লাইটের আলোয় আসেননি মাহমুদুল্লাহ নামের ‘নীরব ঘাতক’! প্রতিপক্ষের ডেরায় ধ্বংস লীলা চালিয়েও প্রাপ্য স্বীকৃতি পাননি। অনেক ক্রীড়া মোদির প্রশ্ন, লোকটা এতো কম জনপ্রিয় কেন? এক যুগ পার করেও যিনি সুনির্দিষ্ট কোন ব্যাটিং পজিশন পাননি। একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এতো ইফেকটিভ বোলার হয়েও নিয়মিত বোলিং পাননা এই অলরাউন্ডার। নাকি মাহমুদুল্লাহ ওসবের ধার ধারেন না? সাকিবকে নিয়ে বই বের হয়। বই রয়েছে মাশরাফির জীবনী নিয়েও। অসংখ্য বিজ্ঞাপনের ভিডিও কিংবা স্থিরচিত্রে যায়গা পেয়েছে টাইগার ক্রিকেটের অনেক সদস্য। নানাবিধ কারণে শিরোনাম হয়েছেন বাকিরা। মাহমুদুল্লাহ যে এসব থেকে একদম গুটিয়ে থেকেছেন তা বলবো না। কিন্তু অন্য সবার থেকে যে আলাদা এক যাপনে ব্যস্ত সে কথা অবলীলায় বলা যায়। কে জানে, হয়তো এমন জীবনেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে ‘সাইলেন্ট কিলার’ মাহমুদুল্লাহ!

Array
We use all content from others website just for demo purpose. We suggest to remove all content after building your demo website. And Dont copy our content without our permission.
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
এই বিভাগের আরও খবর
 
Jugantor Logo
ফজর ৫:০৫
জোহর ১১:৪৬
আসর ৪:০৮
মাগরিব ৫:১১
ইশা ৬:২৬
সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১