• ঢাকা, বাংলাদেশ

আসল স্বাদের মতোই গাছের তৈরি মাংস! 

 admin 
20th Aug 2022 5:17 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

নিউজ ডেস্ক:ধরুন, আপনি মুরগি কিংবা গরুর মাংস খাচ্ছেন। হঠাৎ শুনতে পেলেন এই মাংস গরু-মুররির নয়, এসেছে গাছ থেকে। শুনে আপনার কেমন অনুভূতি হবে? হ্যাঁ, শুনতে কিছুটা অদ্ভুত লাগলেও বিষয়টিকে বাস্তব করেছেন বিজ্ঞানীরা।

বিগত বছরগুলোতে অনেক কোম্পানি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যারা কৃত্রিম মাংস বাজারজাতের চেষ্টা করছে। এর মধ্যে রয়েছে বিল গেটসের অনুমোদন পাওয়া কোম্পানি ‘মেমফিস মিট’। এ ছাড়া  গাছ থেকে ল্যাবে তৈরি করা প্রাণীর কৃত্রিম মাংস সিঙ্গাপুরেও বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। সেখানকার প্রায় সব রেস্টুরেন্টেই বর্তমানে এই মাংসের খাবার পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়াও গেল জানুয়ারিতে পরিবেশ সচেতনতার পদক্ষেপ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের রেস্তোরাঁগুলোতে কেএফসি উদ্ভিদভিত্তিক ফ্রায়েড চিকেনের ব্যবহার শুরু করেছে।

এদিকে ২০১৩ সালে বিজ্ঞানীরা শুধু পশুর শরীর থেকে ‘স্টেম কোষ’ নিয়ে পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কৃত্রিম মাংস তৈরি শুরু করেছিলেন। পরে শুধু উদ্ভিদ থেকে মাংস উৎপন্ন করার নানা প্রক্রিয়া আবিষ্কৃত হয় এবং বিজ্ঞানীরা তাতে সফলও হন। সয়া, আলু থেকে নেয়া প্রোটিন, নারকেল থেকে নেয়া ফ্যাট, সেইসঙ্গে মাংসের আসল স্বাদ আনার জন্য উদ্ভিদ থেকে ‘হিম’ নামের এক পদার্থ দিয়ে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় তৈরি করেছেন মাংস।

সম্প্রতি আইসল্যান্ডের একটি গবেষণাগারে বিজ্ঞানীরা বার্লি বা যবকে মাংসে পরিণত করেছেন! এই প্রক্রিয়ায় যবকে মাংস তৈরির হোস্ট হিসেবে ব্যবহার করা হয়। যব মাড়াই করে বিভিন্ন পদ্ধতিতে বিশুদ্ধ করে তোলা হয় যাতে ওই প্রোটিন দিয়ে পরবর্তী সময়ে গবেষণাগারে মাংস তৈরি করা যায়।

বিজ্ঞানীদের মতে,  খামারের গবাদি পশু থেকে সাধারণ প্রক্রিয়ায় মাংস উৎপাদন সব মিলিয়ে যেখানে কষ্টসাপেক্ষ। তাতে গবেষণাগারে মাংস তৈরিতে সময়, খরচ ও শক্তি অনেকাংশেই কম প্রয়োজন হয়। সেই সঙ্গে গবাদি পশুর খামারের তুলনায় বিষাক্ত বর্জ্যও কম উৎপাদিত হয়। এদিকে গবাদি পশু খাওয়াতে ফসল জন্মানোর জন্য যে বাড়তি জমির প্রয়োজন হতো, তা এ ক্ষেত্রে বলা যায় একবারেই প্রয়োজন হচ্ছে না!

আদিকালে পশু শিকার থেকে শুরু হয়েছে মাংস খাওয়ার প্রচলন। পরবর্তী সময়ে কিছু পশু, হাঁস-মুরগি, টার্কি, কবুতর পালন, মৎস্য শিকার ইত্যাদির মাধ্যমে এর ব্যাপ্তি বৃদ্ধি পেয়েছে। এদিকে মসলার আবিষ্কার মাংসকে বানিয়েছে সুস্বাদু রসনা-তৃপ্তিকর। এসব কর্মকাণ্ডে ব্যবহৃত হচ্ছে অনেক জমি, প্রচুর পশুখাদ্য, তৈরি হচ্ছে প্রচুর বর্জ্য আর কার্বন, ফলে বাড়ছে জলবায়ু দূষণ।

এ ছাড়া জীবাণুঘটিত রোগ, হার্ট ও রক্তনালির রোগসহ স্ট্রোকের পরিমাণ যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে, তেমনি খাদ্যদূষণ, হেভি মেটাল, পয়জনিংসহ আরও অনেক সমস্যা মাংস খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে। আর এ কারণেই চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছিল যে, কীভাবে জীবাণুমুক্ত, ক্ষতিকর পদার্থমুক্ত মানুষের শরীর উপযোগী উপাদান ঠিক রেখে মাংস উৎপাদন করা যায়, এবং এ ক্ষেত্রে বলা যেতে পারে বিজ্ঞানীরা অনেকটাই সফল। এখন শুধু সহজে উৎপাদন বাড়ানোর প্রক্রিয়া চলছে।

‘ফিউচার ফুডস’ নামে একটি জার্নালে সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে একটি নতুন সমীক্ষাপত্র। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, কৃত্রিম উপায়ে তৈরি উদ্ভিদজাত মাংস এবং প্রাণীদের মাংসে প্রায় সমপরিমাণ পুষ্টিগুণ থাকে। এ ছাড়াও উদ্ভিদজাত খাবার পরিবেশের জন্যও খুব ভালো, এবং আগামী দিনে এটি পরিবেশবান্ধব পরিস্থিতি সৃষ্টি করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে চলেছে বলেও এতে দাবি করা হয়েছে।

যারা আমিষ খাবার বা দুগ্ধজাত খাবার খেতে পছন্দ করেন, তাদের ক্ষেত্রে আগামী দিনে উদ্ভিদ থেকে তৈরি মাংস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিকল্প হতে পারে বলেও এই সমীক্ষাপত্রে উল্লেখ রয়েছে। এ ছাড়া এই উদ্ভিদজাত মাংসের বাজার দিনে দিনে বাড়ছে। জার্মান গবেষণা কোম্পানি ‘স্ট্যাটিস্টা’ অনুযায়ী, উদ্ভিদভিত্তিক বিকল্প মাংসের জন্য বৈশ্বিক বাজার ২০২৬ সালে প্রায় ১ হাজার ৬০০ কোটি মার্কিন ডলারের সমতুল্য হবে।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
Array
We use all content from others website just for demo purpose. We suggest to remove all content after building your demo website. And Dont copy our content without our permission.
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
এই বিভাগের আরও খবর
 
Jugantor Logo
ফজর ৫:০৫
জোহর ১১:৪৬
আসর ৪:০৮
মাগরিব ৫:১১
ইশা ৬:২৬
সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১