
ধরুন তাড়াহুড়ো করে বাড়ি থেকে বের হয়ে গেলেন, অনেকটা পথ পাড়ি দেবার পর মনে পড়লো বাসার ফ্যান লাইট এসি অন রেখে এসেছেন, এখন কি করবো কত বিদ্যুৎ-ই না অপচয় হবে। না সমস্যা নেই। একটি মাত্র মোবাইল অ্যাপস দিয়ে আপনার বাসার সকল ইলেক্ট্রিকাল এপ্লায়েন্সের নিয়ন্ত্রন ও নজরদারি করা সম্ভব। পৃথিবীর যেকোন প্রান্তে বসে অ্যাপসে গিয়ে ক্লিক করুন আর আপনার কাজও হয়ে যাবে মুহূর্তেই।
আপনার বাচ্চা নিজেই তৈরী করতে পারবে নিজের রিমোট কন্ট্রোল খেলনা গাড়ী যা আবার বাংলায় ডানে যাও বললে ডানে যাবে বামে যাও বললে বামে যাবে, সামনে যাও এরকম বাংলায় মৌখিক নির্দেশনায় চালানো সম্ভব। একটি লাইন ফলোয়ার রোবট যা হতে পারে আপনার হোটেলের ওয়েটার বা আপনার ফ্যাক্টরির মালামাল বহন কাজে নিয়োজিত সুদক্ষ কর্মী। আরো কত শত কাজ করা সম্ভব একটি মাত্র ডিভাইসে। ধরুন, আপনি রুমে গেলেন আর বাতি নিজে নিজেও জ্বলে ওঠা সহ রুমের তাপমাত্রা অনুযায়ী অটোমেটিক ফ্যান বা এসি চালু ও বন্ধ করতে পারবে।
মজার বিষয় এই ডিভাইসটি তৈরী হয়েছে বাংলাদেশে। যা দিয়ে এরকম আরো ৬০০+ কাজ করা সম্ভব।ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ শিক্ষার্থী তাদের নন প্রফিট সংগঠন Roboment Lab এ রোবটিক্স শিখতে আগ্রহী এমন ২১১ জন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রের উপর গবেষনা চালিয়ে প্রস্তুত করে এই ডিভাইসটির নাম দেন EASIER ।
এই ডিভাইস টি গত ১৪ ১৫ ও ১৬ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক কনফারেন্স সেন্টারে অনুষ্ঠিত DIGITAL DEVICE AND INNOVATIN EXPO 2019 এ প্রদর্শিত হয়। মেলায় সবার নজর কাড়ে এই অনন্য ডিভাইসটি।আট বছরের শিশু থেকে শুরু করে যে কেউ এটি নিমিশেই ব্যাবহার করে নিজেই অনেক যন্ত্র তৈরি করতে পারে কারণ এখানে নেই কোন প্রোগ্রামিং এর ঝামেলা নেই পজেটিভ তার নেগেটিভ তারের ভীতি।
এই ডিভাইস দিয়ে চালনা সম্ভব ১৯ প্রকারের সেন্সর, ২২ প্রকারের ইলেক্ট্রিক্যাল লোড ৬ প্রকার কমিউনিকেশন মডিউল ও ৫ প্রকার লজিক গেইট। EASIER PRO সহ নতুন আরো একটি ভার্সন তারা ইতিমধ্যে তৈরী করেছে তারা। এছাড়া Roboment Lab সংগঠনটি ইতি মধ্যে ২১১ জন শিক্ষার্থী কে বিনা ফি তে রোবটিক্স প্রশিক্ষন দিয়েছে।মেলায় এটি প্রদর্শন করে ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী সিদরাত মুনতাহা নূর প্রান্ত, কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী জেরিন তাসনিম, মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী দ্বীপ চৌধুরী।
সংগঠনটির এডভাইজার হিসেবে আছেন ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. আসাদুজ্জামান চৌধুরী।সংগঠনটির চেয়ারম্যান ডুয়েটের সাবেক ছাত্র ও ডেসকোর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ইঞ্জি: মোঃ সাকীল খান। প্রধান সমন্বয়ক হিসাবে কাজ করছেন ডুয়েটের মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সাবেক ছাত্র সুকান্ত কুমার শিপ্লব।আরো নতুন নতুন এমন অনেক দেশি প্রযুক্তির ডিভাইস তৈরী করে যাচ্ছে এই রোবটিক্স সংগঠনটি। সংগঠনটির গবেষনার কাজে আরো যুক্ত আছেন দানিয়াল ইসলাম, আসাদুজ্জামান নুর, মিঠুন দাস, পূনম চৌধুরী শুভ, আমিন কায়সার, সালমান, পাপ্পু, আতিকুর রহমান ও ফজলে রাব্বী সহ অনেক ডুয়েট ছাত্র।