
রাজধানীর প্রাণ বুড়িগঙ্গা দখলমুক্ত করতে এ যাবতকালের সবচেয়ে বড় অভিযান চলছে। কয়েক দফার অভিযানে ছোট-বড় এক হাজার ৭০৮টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। অভিযান চলাকালে অনেক প্রভাবশালীও রক্ষা করতে পারেননি তাদের স্থাপনা। অভিযানের তীব্রতা দেখে দখলদাররা নিজেরাই সরে যাচ্ছেন। যারা অবৈধভাবে বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণ করেছিলেন তারা ভাড়াটিয়াদের অন্যত্র সরে যাওয়ার নির্দেশনা দিচ্ছেন। এতে সরকারি উচ্ছেদ অভিযানের আগেই উদ্ধার হচ্ছে গাবতলী থেকে কামরাঙ্গীরচর পর্যন্ত বেড়িবাঁধের একাংশ।
মাইকিংয়ে বেড়িবাঁধ সংলগ্ন অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেয়ার পর থেকেই দখলদাররা সরতে শুরু করে। ঢাকা-১৩ আসনের সংসদ সদস্য সাদেক খানের নামে একটি বাজার রয়েছে বেড়িবাঁধের রায়েরবাজার এলাকায়। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উচ্ছেদের ঘোষণা আসার পর কর্তৃপক্ষ নিজেরাই ভেঙে ফেলেছে বাজারের সামনের অংশ। ভাঙা অংশে প্রায় ২০টির মতো দোকান ছিল বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
এলাকাবাসী জানায়, মাইকিংয়ে উচ্ছেদের ঘোষণা দেয়ার পর বাজারের কর্তাব্যক্তিরা নিজেরাই অবৈধ স্থাপনা ভেঙে সরিয়ে নেন। স্থানীয় বাসিন্দা মাইজুল ইসলাম ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘মাইকিং করছে দেখলাম। তারপরই ভাঙা শুরু করছে।’ কারা ভাঙছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কে আর ভাঙব। যাগো বাজার তারাই ভাঙছে।’
অবৈধ স্থাপনা সরানোর হিড়িক দেখা গেছে বেড়িবাঁধের বিভিন্ন স্থানে। সরিয়ে নেয়া হচ্ছে বেড়িবাঁধ সড়কের দুই পাশে অবৈধভাবে গড়ে তোলা আবাসিক ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। যার বেশির ভাগই টংঘর ও আধাপাকা স্থাপনা।
রায়েরবাজার শহীদ বুদ্ধিজীবী গোরস্তানের বিপরীতে সালাম মোয়াজ্জেমের বাড়ি। সরকারি জায়গা দখল করে বেড়িবাঁধ নির্মাণের সময় জায়গাটি তিনি দখলে নেন। এরপর কেটে গেছে প্রায় ৩০ বছর। এতদিন দখলদারিত্ব বজায় রাখতে তার কোনো সমস্যা হয়নি। তবে এবার আর শেষ রক্ষা হচ্ছে না জেনে অনেকটা বিচলিত এই দখলদার। ঢাকাটাইমসকে তিনি জানান, ২০টির মতো কাঁচা ঘর তুলে তিনি ভাড়া দিয়ে আসছেন। প্রতিটি ঘরের ভাড়া এক হাজার টাকার মধ্যে। ঘর ভাড়া থেকে আসা টাকায় তার সংসার চলে না। সংসার চলে গরুর দুধ বিক্রির টাকায়।
সালাম মোয়াজ্জেম ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমার থাকার মধ্যে কয়েকটা গরু আছে। এইগুলার দুধ বেইচা চলি। এক পোলা ড্রাইভার, ও কিছু দেয় তাই দিয়া চলি। আমারে এইখান থেকে উঠাইয়া দিলে আমি কই যামু?’
Array