• ঢাকা, বাংলাদেশ

খাদ্য মজুদের পরিমাণ বাড়াচ্ছে সরকার 

 admin 
08th Sep 2022 8:33 am  |  অনলাইন সংস্করণ

নিউজ ডেস্ক:সরকার খাদ্য মজুদের পরিমাণ বাড়াচ্ছে। মূলত খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই সরকারের এমন উদ্যোগ। বর্তমানে দেশে সর্বোচ্চ পরিমাণ খাদ্যশস্য মজুদ রয়েছে। ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট মজুদের পরিমাণ ছিল ১৯ লাখ ৯৬ হাজার ২১৬ মেট্রিক টন। তার মধ্যে চাল মজুদের পরিমাণ ১৮ লাখ ৫৫ হাজার ৮৩৩ মেট্রিক টন। যা এ যাবত কালের চালের সর্বোচ্চ মজুদ। তার আগে চালের মজুদ সর্বোচ্চ ছিল প্রায় ১৭ লাখ মেট্রিক টন। বর্তমানে দেশে মোট ২১ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য মজুদের ধারণ ক্ষমতা রয়েছে। তবে আরো কিছু গুদাম নির্মাণ করা হচ্ছে। সেগুলোর নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হলে ধারণ ক্ষমতা আরো এক লাখ মেট্রিক টন বাড়বে। খাদ্য মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, পর্যাপ্ত পরিমাণ মজুদ গড়ে ওঠায় দেশে চালের বাজার স্থিতিশীল হচ্ছে। এতোদিন চাল ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট প্রভাব খাটালেও এখন তারা নীরব হচ্ছে। সরকারের হাতে মজুদ কমে গেলে ব্যবসায়ীরা বাজার অস্থিতিশীল করে তোলে। কিন্তু সরকারের হাতে মজুদ বেড়ে যাওয়ায় তারা কারসাজি করা থেকে সরতে শুরু করেছে। তবে কখনো কখনো পর্যাপ্ত মজুদ থাকলেও সিন্ডিকেট চক্র সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং চালের বাজার অস্থিতিশীল করে তোলে। তখন দ্রুত চাল আমদানি করে এবং ওএমএস কর্মসূচি চালু করে সরকার বাজার স্থিতিশীল করে। বর্তমানেও চালের বাজার স্থিতিশীল করতে দেশের সকল সিটি করপোরেশন ও পৌর এলাকায় ওএমএস কর্মসূচি চলছে। সারাদেশে ২ হাজার ১৩ ডিলারকে প্রতিদিন দুই টন করে চাল বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। তাছাড়া সিটি শহরগুলোতে ট্রাক সেলে সাড়ে ৩ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ থাকছে। তাতে প্রতি কেজি চাল ৩০ টাকা এবং প্রতি কেজি আটা ১৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সাধারণ মানুষ প্রতিদিন ওই কর্মসূচীর আওতায় চাল ও আটা কিনছে।
সূত্র জানায়, বোরো মৌসুমে এবার চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রার শতভাগেরও বেশি অর্জিত হয়েছে। ১০ লাখ মেট্রিক টন লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে সরকার এবার ১১ লাখ ৭৪ হাজার ৯৮০ মেট্রিক চাল সংগ্রহ করেছে। পাশাপাশি রেকর্ড পরিমাণ চালের মজুদও গড়ে উঠেছে। বর্তমানে সরকারের মজুদের পরিমাণ ১৯ লাখ ৯৬ হাজার ২১৬ মেট্রিক টন। তাছাড়া চাল ও গম মিলিয়ে আরো প্রায় সাড়ে ৮ লাখ মেট্রিক টন আমদানির প্রক্রিয়ায় রয়েছে। তাছাড়া সরকার আরো ৫ লাখ টন গম আমদানির অনুমোদন দিয়েছে। তাতে সরকারের খাদ্য মজুদ সর্বকালের রেকর্ডে পরিণত হবে। পাশাপাশি বেসরকারীভাবে বিদেশ থেকে চাল আমদানি শুরু হয়েছে। ওসবের কারণে দেশের বাজারে কমতে শুরু করেছে চালের দাম। বোরো চাল সংগ্রহ অভিযানের শেষ দিন ছিল ৩১ আগস্ট। তার আগেই মন্ত্রণালয় শতভাগের বেশি চাল সংগ্রহে সফলতা দেখিয়েছে। এবার চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১০ লাখ মেট্রিক টন। কিন্তু ৩১ আগস্ট লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ১ লাখ ৭৪ হাজার ৯৮০ মেট্রিক টন চাল বেশি সংগৃহীত হয়েছে। তাছাড়া ২ লাখ ৬৭ হাজার ৯৭৪ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করা হয়। যদিও ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা ছিল সাড়ে ৬ লাখ মেট্রিক টন। কিন্তু ওই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারেনি।
সূত্র আরো জানায়, সরকারিভাবে আমদানির পথে রয়েছে প্রায় সাড়ে ৮ লাখ মেট্রিক টন চাল-গম। আগামী এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে সেগুলো দেশে আসবে। তার মধ্যে রাশিয়া থেকে ৫ লাখ মেট্রিক টন গম, ভিয়েতনাম থেকে ২ লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন চাল এবং ভারত থেকে ১ লাখ মেট্রিক টন চাল আনা হচ্ছে। ওই হিসেবে আগামী দুই-এক মাসের মধ্যে সরকারের মজুদে যোগ হবে আরো প্রায় সাড়ে ৮ লাখ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য। তাছাড়া খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্প্রতি ৩৮০টি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ১০ লাখ মেট্রিক টন চাল বেসরকারিভাবে আমদানির অনুমতি দিয়েছে। বেসরকারিভাবে ওই চাল আসা শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে সরকার শুল্কমুক্ত চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছে। চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে গত ১২ আগস্ট চাল আমদানির শুল্ক কমিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। চালের আমদানি শুল্ক ৬২ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়েছে। সরকার এখন চাল শুল্কমুক্ত আমদানির সুযোগ দিয়েছে। ইতোমধ্যে আমদানির চাল স্থলবন্দরসমূহ দিয়ে বাংলাদেশে আসতে শুরু করেছে। ফলে পাইকারি ও খুচরা বাজারে কমতে শুরু করেছে চালের দাম।
এদিকে এ বিষয়ে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার জানান, সরকার দেশের ১৬ কোটি মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায়। ওই লক্ষ্যে খাদ্য মজুদের পরিমাণ বাড়ানো হচ্ছে। অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে ইতোমধ্যে শতভাগ চাল সংগ্রহ করা হয়েছে। টার্গেট পূরণের পর আগ্রহীদের নতুন করে আবার বরাদ্দ দেয়া হয়। বর্তমানে দেশে এ যাবতকালের সর্বোচ্চ পরিমাণ চালের মজুদ রয়েছে। তারপরও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত ও বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য চাল আমদানি বাড়াতে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে দেশে আমন আবাদ কিছুটা ব্যাহত হতে পারে। শুধু দেশে নয়, সারা বিশ্বেই খাদ্য উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

Array
We use all content from others website just for demo purpose. We suggest to remove all content after building your demo website. And Dont copy our content without our permission.
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
এই বিভাগের আরও খবর
 
Jugantor Logo
ফজর ৫:০৫
জোহর ১১:৪৬
আসর ৪:০৮
মাগরিব ৫:১১
ইশা ৬:২৬
সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১