• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • ১৩ মার্চ, ২০২৫

ড. কামালের কাছে ক্ষমা চাইলেন তারেক 

 admin 
24th Nov 2018 9:52 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

ক্ষমা চাইলেন তারেক – নির্বাচনের জন্য আসন ভাগাভাগি নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মূল দল বিএনপি ও জোটের অন্যান্য শরিক দলগুলোর মধ্যে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে নির্বাচনের আসন চূড়ান্ত করা নিয়ে বিএনপির মনোনয়ন বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সে সভায় লন্ডন থেকে নেতৃত্ব দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া। ওই সভায় সিদ্ধান্ত হয়, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলের জন্য সর্বোচ্চ ৫০টি আসন ছাড়বে বিএনপি। বিএনপির এমন সিদ্ধান্তে ঐক্যফ্রন্ট ক্ষুব্ধ হওয়ায় ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে জোটটি।

জানা গেছে,  আসন্ন নির্বাচনে ২০ দলীয় জোটের শরিকদের জন্য ২৫টি এবং ঐক্যফ্রন্টের শরিক দলগুলোর জন্য ২৫টি আসন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। বিএনপির সিদ্ধান্ত জানার সঙ্গে সঙ্গেই ঐক্যফ্রন্টের শরিকদের মধ্যে বিদ্রোহ দেখা দিয়েছে। এই সিদ্ধান্তে ২০ দলের মধ্যে তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা না দিলেও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক দলগুলো তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে।

একথা জানতে পেরে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মান ভাঙাতে শেষ পর্যন্ত তারেক জিয়াই লন্ডন থেকে ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে কথা বলেন এবং নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত ঐক্য অটুট রাখতে এবং যে কোনো মূল্যে নির্বাচনী ঐক্যকে টিকিয়ে রাখতে অনুরোধ করেন। তারেক ড. কামাল হোসেনকে অভিভাবক সম্বোধন করে বলেন, ‘আপনি ছাড়া ঐক্য অসম্ভব ব্যাপার।’

কিন্তু ড. কামাল জবাবে বলেন, ‘আমাকে বাদ দিয়ে আপনারাই সবকিছু করছেন। বাকিটাও আপনারা করেন।’ ড. কামালের ক্ষোভ বুঝতে পেরে তারেক জিয়া ক্ষমা প্রার্থনা করে বলেন, ‘আমি আপনার সন্তানের মতো। আমার কোনো ভুল-ত্রুটি হলে ক্ষমা করে দেবেন। কিন্তু আপনারা ঐক্যের মধ্যে আসেন।’

তারেক জিয়া এ সময় আরও বলেন, ‘ঐক্যফ্রন্টের কতগুলো আসন দরকার সরাসরি আমাকে সে তালিকা দিলে আমি ব্যবস্থা করবো।’ তারেকের এই কথার পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরীক দলগুলোর একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আজ শনিবার বিকেলে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বৈঠকে শরীক দলগুলো বিএনপির কাছে প্রত্যাশিত আসনের একটি সর্বনিম্ন তালিকা দেবে। এই তালিকা মেনে না হলে ঐক্যফ্রন্টের দলগুলো বিএনপির সঙ্গে ঐক্যের থাকবে না বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো।

শ্রদ্ধায় বিদায় তোমাদের

দেশের রাজনীতিতে দীর্ঘ দিনের ত্যাগী, নিবেদিত প্রাণ, পরীক্ষিত এবং দলের দুঃসময়ের কাণ্ডারি এমন কয়েকজন রাজনীতিবিদ এবারের জাতীয়

নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন না বলে জানা গেছে। এই সংসদ নির্বাচনে তাঁরা রাজনীতিকে বিদায় জানানোর মাধ্যমে দীর্ঘ রাজনৈতিক জিবনের ইতি টানছেন।

বেগম সাজেদা চৌধুরীঃ আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের কাণ্ডারি বেগম সাজেদা চৌধুরী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে ফুফু বলেই ডাকেন। পঁচাত্তর সালের ১৫ আগস্টে জাতির পিতা সপরিবারে হত্যার পর যে দুজন আওয়ামী লীগের হাল ধরেছিলেন। তাঁদের একজন হলেন জোহরা তাজ উদ্দিন এবং অপরজন হলেন সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অত্যন্ত বিশ্বস্ত এবং আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত সাজেদা চৌধুরী। সর্বশেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী তিনি এবারের নির্বাচন করছেন না। তিনি অত্যন্ত অসুস্থ এবং পারিবারিক কোন্দল ও নানা কারণে তাঁর আসনে হয়তো তাকে পরিবর্তন করা হতে পারে বলেই জানা গেছে। তিনি যদি এবারের নির্বাচন না করেন, তাহলে তাঁর দীর্ঘ বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের সমাপ্তি ঘটবে বলেই রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের ধারণা।

সাহারা খাতুন: বাংলাদেশের রাজনীতিতে সাহারা খাতুন একজন আদর্শ কর্মী হিসেবেই সবচেয়ে বেশি সমাদৃত এবং পরিচিত। তিনি রাজনীতি থেকে পেয়েছেন অনেক কম, কিন্তু রাজনীতি করতে গিয়ে তিনি দেশ ও দলকে দিয়েছেন অনেক বেশি। দলের নেতৃত্বের পতি তাঁর বিশ্বাস এবং আস্থা কোনো সময় নষ্ট করেন নাই। দুঃসময়ের কাণ্ডারি হিসেবে তিনি পরিচিত। বিশেষ করে ওয়ান ইলেভেনের সময় তাঁর সাহসী ভূমিকা দলে এবং দলের বাইরেও প্রশংসিত হয়েছিল। গত নির্বাচনে ঢাকার উত্তরার একটি আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। কিন্তু এবারের নির্বাচনে তিনি মনোনয়ন পাচ্ছেন না বলেই এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে। তিনি যদি শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন না পান, তাঁর যে বয়স তা থেকে ধারণা করা যায়, এটাই হবে তাঁর রাজনীতির অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি।

কর্নেল (অবঃ) শওকত আলী: শরিয়তপুরের একটি আসন থেকে নির্বাচন করেছিলেন কর্নেল (অব:) শওকত আলী। তিনি ডেপুটি স্পীকার ছিলেন। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সহ আসামি হিসেবে তাঁর নাম ছিল। রাজনৈতিক জীবনে তিনি বহু ত্যাগ এবং কষ্ট স্বীকার করেছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি বীর সৈনিক হিসেবে দেশের জন্যে লড়েছেন। বার্ধক্যজনিত কারণে কর্নেল (অব:) শওকত আলী এবারে হয়তো মনোনয়ন পাবেন না। তিনি যদি এবারে মনোনয়ন না পান, তাহলে তারও রাজনৈতিক জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

শুধু আওয়ামী লীগই নয়, বিএনপি থেকেও এবারের নির্বাচনে মনোনয়ন না পাওয়ার কারণে, অনেক বিএনপি নেতার রাজনৈতিক জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকমহল মহল মনে করছে।

ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার: বার্ধক্যের কারণে ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার এবারের নির্বাচনে হয়তো প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না। ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন বিএনপির দুঃসময়ের কাণ্ডারি ছিলেন। বিএনপি আমলে তিনি জাতীয় সংসদের স্পিকারের দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতিও ছিলেন। তিনি কখনই তাঁর নীতি আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি। বিশেষ করে ওয়ান ইলেভেনের সময় খালেদা জিয়া গ্রেপ্তারের পর, তিনি দলের শীর্ষ নেতাদের প্রতি অনুগত ছিলেন। তাঁর আসনে হয়তো তাঁর পুত্র বা অন্য কাউকে বিএনপি মনোনয়ন দিবে বলে এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত খবরে জানা যাচ্ছে। তিনি যদি এবারে নির্বাচন না করেন, তাহলে এই বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদের রাজনৈতিক জীবনের ইতি ঘটবে।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাহাবুবুর রহমান: সাবেক সেনাপ্রধান ছিলেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাহাবুবুর রহমান। তিনি দিনাজপুরের একটি আসন থেকে নির্বাচন করেছিলেন। জেনারেল মাহাবুবের রাজনৈতিক বিশ্বাসের চেয়ে, তাঁর ব্যক্তিগত সততা, নিষ্ঠা এবং স্পষ্টবাদিতার কারণেই তিনি দেশের রাজনীতিতে চির স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। তিনি বিএনপিতে তারেক জিয়ার অপশাসন এবং জিয়া পরিবারের একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। ৯৬ সালের নির্বাচনের কঠিন সময়ে তাকে সেনাপ্রধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল এবং সেই দায়িত্ব তিনি নিষ্ঠার সঙ্গেই পালন করেছিলেন। রাজনীতিতে স্পষ্টবাদিতা এবং নিজের মত খোলামেলাভাবে বলার কারণে, তিনি প্রশংসিত, সমালোচিত এবং নিন্দিত। এবারের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি যদি মনোনয়ন না পান, তিনি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন না করতে পারেন, তাহলে এখানেই তারও রাজনৈতিক জীবনের অবসান ঘটবে।

Array
We use all content from others website just for demo purpose. We suggest to remove all content after building your demo website. And Dont copy our content without our permission.
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
এই বিভাগের আরও খবর
 
Jugantor Logo
১৩ মার্চ, ২০২৫
ফজর ৫:০৫
জোহর ১১:৪৬
আসর ৪:০৮
মাগরিব ৫:১১
ইশা ৬:২৬
সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১