বাংলাদেশ পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার) বলেছেন, আধুনিক ও মানবিক পুলিশিং করতে আমরা কাজ করছি। শুধু পুলিশ পরিবর্তন হলে হবে না, সামাজিক পরিবর্তনের ধারার সাথে পুলিশের পরিবর্তনের সামঞ্জস্য থাকতে হবে। তবে সমাজের পরিবর্তনের সাথে সাথেই পুলিশকে এগিয়ে নিতে হবে। আমাদের দরকার কোয়ালিটি পুলিশিং। আমরা চেষ্টা করব পুলিশে ৭ শতাংশ নারী থেকে আরও নারীর অংশগ্রহণ বাড়ানোর জন্য। আমরা পুলিশে নিয়োগের পলিসি পরিবর্তনের চেষ্টা করছি। সেটা সম্ভব হলে অনেক পরিবর্তন আসবে।
সোমবার (২২ মার্চ) দুপুরে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটরিয়াম রাজারবাগে আন্তর্জাতিক নারী দিবস ২০২১ উপলক্ষে বাংলাদেশ পুলিশ উইমেন নেটওয়ার্ক (বিপিডব্লিউএন) আয়োজিত “জেন্ডার রেসপন্সিভ পুলিশিং: অ্যান এপ্রোচ অব বাংলাদেশ পুলিশ এন্ড রোল অব বাংলাদেশ পুলিশ উইমেন নেটওয়ার্ক (বিপিডব্লিউএন)” শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন আইজিপি।
সকলকে মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর শুভেচ্ছা জানিয়ে আইজিপি বলেন, গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় পুলিশের ওপর নির্ভরতা অনেক বেশি। জেন্ডার রেসপনসিভ পুলিশিং এর ক্ষেত্রে গত ১০/১২ বছরে অনেক পরিবর্তন এসেছে। জীবনের এমন কোনো ক্ষেত্র নেই যেখানে পুলিশের ভূমিকা নেই। আমাদের সেভাবে কাজ করতে হবে।
আইজিপি বলেন, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ইনডেক্সে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় ভালো। উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশ এখন রোল মডেল। বিশেষ করে গত ১২ বছর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিস্ময়কর উন্নয়নের রোল মডেল হয়েছে। আমরা এগিয়েছি অনেক দূরে, যেতে হবে বহুদুর।
তিনি আরও বলেন, আমরা অর্থনৈতিকভাবে উন্নতি করছি, কারণ অর্থনীতিতে নারীদের অংশগ্রহণ বেড়েছে। দারিদ্রের শেকল ভাঙ্গার কারিগর হচ্ছে নারীরা।
পুলিশে উইমেন পুলিশিং বাড়ছে উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, জাপান পুলিশে ৭ শতাংশ নারী আছে অন্যদিকে আমাদের রয়েছে ৭.৯ শতাংশ। আমরা টার্গেট করেছিলাম ২০১৫ সালের মধ্যে ১৫ শতাংশে পৌঁছব। সেটা সম্ভব হয়নি। পুলিশে অংশগ্রহণে নারীদের আগ্রহী করতে বিপিডব্লিউএন কে স্কুল কলেজে গিয়ে ‘উইমেন লাইফ ইন পুলিশ’ বিষয়ক ডকুমেন্টরি প্রদর্শন করার পরামর্শ দেন আইজিপি ।
আইজিপি বলেন, আমরা অন্য কোনো দেশ থেকে পুলিশিং সিস্টেম কাট কপি করতে চাই না। কারণ আমাদের দেশের অবস্থা সমাজব্যবস্থা, ঐতিহ্য সম্পূর্ণ আলাদা।
পুলিশ প্রধান বলেন, আমরা অনেক আগেই উইমেন ও ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার চালু করেছি। শুধু ভিকটিম নারী না তার বাচ্চারও দেখভাল করছে পুলিশ।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে ৩টি ক্যাটাগরিতে রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করে বিপিডব্লিউএন। ৩টি ক্যাটাগরিতে ৮ জন বিজয়ীকে পুরস্কৃত করেন আইজিপি। পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন- পুলিশ সুপার লালমনিরহাট আবিদা সুলতানা বিপিএম, পিপিএম, ময়মনসিংহ জেলার বিশেষ শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জয়িতা শিল্পী, নওগাঁ জেলার বিশেষ শাখার পুলিশ পরিদর্শক নন্দীতা সরকার, দিনাজপুর জেলার কোতয়ালী থানার নারী এসআই বিপ্লবী বেগম, ডিএমপির কনস্টেবল আফরিন সুলতানা, কনস্টেবল নাজনীন নাহার, কনস্টেবল সুমনা ইসলাম ও ঝালকাঠি জেলার কনস্টেবল সুখী দে।
বিপিডব্লিউএন এর সভাপতি ও ডিআইজি (প্রটেকশন এন্ড প্রটোকল) এসবি আমেনা বেগম বিপিএম এর সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন ও অপারেশন্স) ড. মোঃ মইনুর রহমান চৌধুরী, বিপিএম (বার), জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) উপ-আবাসিক প্রতিনিধি ভ্যান নুয়্যান, বিসিএস নারী নেটওয়ার্ক এর মহাসচিব ও যুগ্ম সচিব স্থানীয় সরকার ও সমবায় মন্ত্রণালয় শায়লা ফারজানা। এসময় দেশের ৬৪ জেলার নারী পুলিশ অফিসাররা ভার্চুয়ালি এই অনুষ্ঠানের সাথে যুক্ত ছিলেন। সূত্র: ডিএমপি নিউজ।
Array