
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) হিসাবে দেখা যায়, ২০১৯-২৯ অর্থবছরে আয় হয়েছে মাত্র ২ লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকা, যা সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ৮৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা কম।
এপ্রিল থেকে জুন-এই তিন মাসে বিশ্ব ব্যাংক ১৬০ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছে বাংলাদেশকে। এডিবি দিয়েছে ৬০ কোটি ২৮ লাখ ডলার।
নানা শর্তের কারণে আইএমএফের কাছ থেকে অর্থ পাওয়া তুলনামূলকভাবে কঠিন। সেই আইএমএফের কাছ থেকেও মাত্র এক মাসের দর-কষাকষিতে ৭৩ কোটি ডলার বাজেট সহায়তা মিলেছে।
চীনের নেতৃত্বে গঠিত এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংক (এআইআইবি) গত এপ্রিলে ১৭ কোটি ডলার দিয়েছে।
সঙ্কটকালে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে ঋণ পেতে সরকারের তৎপরতায় সন্তোষ প্রকাশ করে তার যথাযথ ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন অর্থনীতির গবেষক পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর।
“সরকার দেশের সঙ্কটে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কাছে ভালোভাবেই উপস্থাপন করতে পেরেছে। সে কারণেই তারা দ্রুত সাড়া দিচ্ছে।
“এখন আমাদের কাজ হবে এই টাকার যথাযথ ব্যবহার। স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতার সঙ্গে এই টাকা খরচ করতে হবে।”
২০১৯-২০ অর্থবছরের মূল বাজেটে ব্যাংক থেকে ৪৭ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ধরা ছিল। তবে সংশোধিত বাজেটে তা বাড়িয়ে ৮২ হাজার ৪২১ কোটি টাকা করা হয়।
চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে বাজেট ঘাটতি মেটাতে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ৮৪ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। গত কয়েক বছরে সঞ্চয়পত্র থেকে প্রচুর ঋণ পাওয়ায় সরকার ব্যাংক থেকে তেমন ঋণ নেয়নি।
ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকার ৬ থেকে ৮ শতাংশ সুদে ঋণ পায়। অথচ সঞ্চয়পত্রে গুণতে হয় ১১ দশমিক শূন্য ৪ থেকে ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
তবে গত কয়েক বছরে প্রচুর সঞ্চয়পত্র বিক্রির ফলে সরকারের সুদ ব্যয় বেড়ে গেছে। বর্তমানে প্রতি মাসে গড়ে প্রায় ২ হাজার ৪০০ কোটি টাকার সুদ পরিশোধে ব্যয় হচ্ছে। সঞ্চয়পত্রে সরকারের ঋণ স্থিতি রয়েছে ২ লাখ ৯৮ হাজার ২৮৭ কোটি টাকা।
সুদ কমাতে সঞ্চয়পত্র কেনার সীমা কমিয়ে, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও টিআইএন বাধ্যতামূলক করাসহ নানা উপায়ে বিক্রি নিরুৎসাহিত করছে সরকার। নতুন বাজেটে সঞ্চয়পত্র থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।
গত অর্থবছরের মূল বাজেটে এ লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৭ হাজার কোটি টাকা। তবে বিক্রি পরিস্থিতি নাজুক হওয়ায় সংশোধিত বাজেটে তা কমিয়ে ১১ হাজার ৯২৪ কোটি টাকা করা হয়।
গত ২০১৯-২০ অর্থবছরের ১০ মাসের (জুলাই-এপ্রিল) যে তথ্য জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর প্রকাশ করেছে, তাতে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকার ১০ হাজার ৫৮১ কোটি টাকা ঋণ পেয়েছে।
Array