• ঢাকা, বাংলাদেশ

ভালোবাসা দিবস হোক অন্যায়-অসত্যের বিরুদ্ধে সেতুবন্ধন 

 admin 
14th Feb 2019 4:31 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

আজ ১৪ ফ্রেব্রুয়ারি, ‘ভ্যালেন্টাইন ডে’ ভালোবাসা দিবস। পৃথিবীর হাতে গোনা কয়েকটিমাত্র দেশ বাদে আড়ম্বর জাঁকজমকভাবে পালন করা হচ্ছে এ দিনটা।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এ দিনটা ঘিরে পালন করা হচ্ছে, নতুন নতুন ভিন্নধর্মী একাধিক চোখ ধাঁধানো অনুষ্ঠান। শিশু হতে বৃদ্ধ পর্যন্ত কেউ পিছিয়ে নেই আড়ম্বরে।

আমাদের দেশেও এ দিনকে ঘিরে অনুষ্ঠানের কমতি নেই।এর মধ্যে হোটেল, রেস্তোরাঁ, মাঠ, পার্ক, কটেজ, ডিজে-ব্যান্ড পার্টি, কমিউনিটি সেন্টার, কনভেনশন হল, ফুলের দোকান, চায়নিজ রেস্তোরার চাহিদা গগনচুম্বী।

ভোর হতে সবাই বর্ণিল সাজে হাতে হাত রেখে ‘কোথাও আজ হারিয়ে যেতে নেই মানা’ চিন্তনে বাঁধভাঙ্গা উচ্ছাসে বিভোর অনুরাগের পথচলা। যে ভাবেই হোক, ভালোবাসতেই হবে, ফটোসেশন করতেই হবে…

আজ এ ভালোবাসা দিবসের একটু পিছনে ফেরা যাক। ২৬৯ খ্রিস্টাব্দে ইতালির রোম নগরীতে সেন্ট ভ্যালেইটাইনস নামের একজন খ্রিস্টান পাদ্রী ও চিকিৎসক ছিলেন। ধর্ম প্রচারের অভিযোগে তৎকালীন রোমান সম্রাট দ্বিতীয় ক্রাডিয়াস তাকে বন্দী করেন। কারণ তখন রোমান সম্রাজ্যে খৃষ্টধর্ম প্রচার নিষিদ্ধ ছিল।

বন্দী থাকা অবস্থায় তিনি জনৈক কারারক্ষীর অন্ধ মেয়েকে সুস্থ করে তোলেন।এতে রাজা আরও ঈর্ষান্বিত হয়ে সেন্ট ভ্যালেইটাইনসকে মৃত্যুদণ্ড দেন। সে দিন ছিল ১৪ ফ্রেব্রুয়ারি।

অতঃপর ৪৯৬ খিস্টাব্দে পোপ সেন্ট জেলাসিউ ও প্রথম জুলিয়াস ভ্যালেইটাইনস স্মরণে ১৪ ফ্রেব্রুয়ারিকে ভ্যালেন্টাইন দিবস ঘোষণা করেন।

সময়ের স্রোতধারায় চড়াই উতরাই পেরিয়ে ত্যাগ ও সুন্দরের মহিমা, ভালোবাসার পূর্ণতা এখন বিশ্বজুড়ে পালিত হচ্ছে, রোমান্টিক ঘরনায়।

যে ত্যাগ, অসত্য, কুৎসিত, হিংসা, কদাকার চরিত্র, ভণ্ডামি, মূর্খতা, মিথ্যার বিরুদ্ধে এক সাহসী মহীয়সী নারীর আত্মত্যাগের জয়, সুন্দরের জয়কে কালের বিবর্তন হাওয়া ত্যাগের মুকুট আস্তে আস্তে উড়িয়ে নিয়ে গেল?

এখন শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বময় ভালোবাসা দিবস মানে, রোমাঞ্চ, উদ্দাম নৃত্য, যৌনতা, বেলেল্লাপনা, গোলাপের বন্দনার ফ্যাশন, নতুন নতুন বাহারি পোষাক, আলো আঁধার পরিবেশ, চোখ বন্ধ সংস্কৃতি, রেসিপি বারোটা বাজানো খাবার, হরেক রকম গিফট, গলা ভিজিয়ে ভয়ংকর শব্দদুষন, আরো কতো কি?

আসলে প্রত্যেক দিবসের একটি অন্তর্নিহিত তাৎপর্য থাকে। সে তাৎপর্যের মহিমায় জাগ্রত হয় মনুষ্যত্ব ও বিবেক। সে বিবেকের তাড়নায় মানুষ নিজেকে সংশোধন করে, নতুন প্রেরণায় পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্রে সত্য ও সাম্যের বীজ বপন করেন।

আমাদের জীবন ক্ষণস্থায়ী। এ ক্ষণস্থায়ী জীবনে লোভ, লালসা, চরম ভোগবাদী চিন্তা, নিন্দা, পরচর্চা, ঈর্ষা, হিংসা, ব্যাভিচার, ধর্ষন, প্রতারণা পরস্পরের অমঙ্গল কামনা নিত্য সহচর।

প্রতিনিয়ত পরিবার, আপনজন, রক্তের সম্পর্ক, আত্মজা, প্রতিবেশী, সমাজ, এমন কোনো স্থান নেই, যেখানে মানুষের চরম আত্মকেন্দ্রিকতা কাজ করে না। মানবজীবনে সহজ নির্লোভ সারল্যে প্রাধান্য পায় সাম্য। সে সাম্যের চিন্তনের অবগুন্ঠনে জেগে ওঠে বিবেক। বিবেক জাগ্রত হলেই পালিয়ে যায়, আত্মকেন্দ্রিক মানসিকতা।

যে অবিচার, অসত্য, অসুন্দর, ঈর্ষার বিরুদ্ধে। ভালোবাসা ও সাম্যের জয়গানে ভালোবাসা দিবসের প্রতিপাদ্য শুরু হয়েছিলো ৪৯৬ খ্রিস্টাব্দে এক মহীয়সীর নিজের জীবনের বিনিময়ে, অসত্য অসুন্দরের বিরুদ্ধে মহাত্মার চেতনাকে ঘিরে যুগ যুগান্তর পেরিয়ে সে মহাত্মা ধারার পরিবর্তে হারিয়ে গেছে, ভালোবাসা দিবসের প্রতিপাদ্য।

আজ বিশ্বে এ দিবসকে ঘিরে জুটি বিয়ে, প্রপোজ, ক্লাব, হোটেল, মোটেল, কটেজ, উদ্দাম যৌনতা, একেবারেই একান্তে হারিয়ে যাওয়া, বার, বিচ, ছাদ, পার্ক, সিনেমা, বিনোদন, বন-জঙ্গল, সাগর, পর্বতকে এ ভালোবাসা দিবসের উপজীব্য করে চরম সুখভোগে ত্যাগের মহীমাকে চপোটাঘাতের ক্রন্দনে ভাসিয়ে নিয়ে চলেছেন।

আজ ভ্যালেন্টাইন দিবসের মহিমায় যদি আমরা ধারণ করি, সে ১৪ ফ্রেব্রুয়ারি হারিয়ে যাওয়া সত্য, অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে নিরলস সংগ্রামী লড়াকু মহীয়সী ভ্যালেইটাইনস এর উদ্দেশ্য ও মহিমা! তবেই সাম্যকেন্দ্রিক সার্বজনীন ভালোবাসায় সিক্ত হবে ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজ।

যে ভালোবাসায় শিক্ত হয়ে অসত্য, অসুন্দর, অবিচার, কপটতা, হিংসা হারিয়ে যাবে, আমাদের ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজ হতে চিরতরে। এ হোক আজ বিশ্বব্যাপী পরস্পরের ভালোবাসা দিবসের আলাপন, অনুরাগের সেতুবন্ধন…রাজীব কুমার দাশ

Array
We use all content from others website just for demo purpose. We suggest to remove all content after building your demo website. And Dont copy our content without our permission.
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
Jugantor Logo
ফজর ৫:০৫
জোহর ১১:৪৬
আসর ৪:০৮
মাগরিব ৫:১১
ইশা ৬:২৬
সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১