
চট্টগ্রামে ভোগ্যপণ্যের দাম দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ দাম বৃদ্ধিতে নাভিশ্বাস উঠেছে স্বল্প আয়ের মানুষের। বিশেষ করে মধ্য ও নিম্নবিত্তের লোকেরা চোখে অন্ধকার দেখা দিয়েছে। একে তো করোনাকালে আয় নেই, তার উপর দ্রব্যমূল্য বাড়ছে— তাতে এসব লোক দিশাহারা হয়ে পড়েছেন।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, সব ধরনের ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়েই চলেছে। চাল, তেল, পেঁয়াজ, আদা, রসুন, চিনি, মসুর ডালসহ সকল নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে। গত এক সপ্তাহে এসব পণ্য কেজিতে ১০ থেকে ৩৫ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। কোন কোন পণ্যের দাম দ্বিগুণও হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, পর্যাপ্ত পণ্য মজুদ থাকার পরও ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। কোন কোন পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করা হয়েছে। দেখা যায়, খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে। অথচ গত এক সপ্তাহ আগেও ভারতীয় ২৫ থেকে ৩০ টাকা এবং দেশি পেঁয়াজ ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল।
গত এক বছর আগেও দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম রেকর্ড পরিমাণ বেড়ে যায়। ভারত থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পেঁয়াজ রপ্তানি নিষিদ্ধ করায় বাংলাদেশের পেঁয়াজের দাম ক্রমান্বয়ে বাড়তে বাড়তে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায় পর্যন্ত বিক্রি হয়। চালের দামও বৃদ্ধি পেয়েছে।
পাইকারি বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ ও পাহাড়তলী থেকে মহানগর ও ১৫ উপজেলায় চাল সরবরাহ করা হয়। মোটা সিদ্ধ চালের দাম বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) মানভেদে প্রতি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা বেড়ে গেছে। প্রতি বস্তা এক হাজার ৯৫০ থেকে দুই হাজার ১০০ টাকার চাল এখন দুই হাজার ৩৫০ টাকায়।
মিনিকেট সিদ্ধ দুই হাজার ২০০ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার ৪০০ থেকে দুই হাজার ৫০০ টাকা, পারি সিদ্ধ প্রতি বস্তায় দুই হাজার ৫০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার ৪৫০ টাকা, পুরনো পাইজাম দুই হাজার টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার ৮৫০ থেকে দুই হাজার ৯৫০ টাকা, দুই হাজার ৬৫০ টাকার দিনাজপুরী পাইজাম বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার ৭৫০ টাকা, চার হাজার ৫০০ টাকার চিনিগুড়া চাল বিক্রি হচ্ছে চার হাজার ৭৫০ টাকায়।
তা ছাড়া প্রতি মণ চিনি বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার ২০০ টাকা। এক সপ্তাহ আগেও এর মূল্য ছিলো দুই হাজার থেকে দুই হাজার ২০ টাকা পর্যন্ত। প্রতি মণ পাম অয়েল তেল বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার ৯৫০ টাকা।
এক মাস আগে এর মূল্য ছিলো দুই হাজার ৮০০ টাকা। প্রতি কেজি মিয়ানমারের আদা বিক্রি হচ্ছে ৯৫ থেকে ১০০ টাকা। এক সপ্তাহ আগেও এর মূল্য ছিলো ৮০ টাকা। চীনা রসুন প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা। এক সপ্তাহ আগেও এর মূল্য ছিলো ৫০ টাকা। আমদানি করা প্রতি কেজি মসুর ডাল (মানভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা। এক সপ্তাহ আগেও বিক্রি হয়েছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকা। দেশীয় মসুর ডাল এখন বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬৫ টাকা।
এর আগে বিক্রি হয়েছিল ৪৫ থেকে ৫৫ টাকা। চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার কল্যাণ সমিতির সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমরা আড়তদার। ব্যবসায়ী-আমদানিকারকরা যেদামে বিক্রি করতে বলেন আমরা সেদামেই বিক্রি করি। মাঝে আমরা কমিশন পাই।
দাম বাড়া কমাতে আমাদের কোনো হাত নেই। দিন দিন দাম বাড়তে থাকায় স্বল্প আয়ের লোকজনের নাভিশ্বাস উঠেছে। তারা সংসারের খরচ যোগাতে হিমশিম খাচ্ছে। এ ছাড়া অনেকের আয় আগের চাইতে অনেক কমে গেছে। তাদের অবস্থা আরো শোচনীয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
Array