রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে তিন দিনব্যাপী ‘ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ফোক ফেস্ট’-এর পর্দা নামছে আজ।
গত বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী ‘ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ফোক ফেস্ট’-এর পঞ্চম আসর। সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুরু হয়ে উৎসব চলে রাত ১২টা পর্যন্ত। বাংলাদেশসহ ছয় দেশের দুই শতাধিক শিল্পী অংশ নিচ্ছে এবারের উৎসবে। প্রথম দিনের বিভিন্ন পরিবেশনায় অংশ নেয় বাংলাদেশের নৃত্যশিল্পী সামিনা হোসেন প্রেমা ও তার নৃত্যদল ভাবনা। লোকসঙ্গীত পরিবেশন করে বাংলাদেশের শাহ আলম সরকার ও জর্জিয়ার শেভেনেবুরেবি এবং ভারতের দালের মেহেন্দি। দ্বিতীয় দিনের পরিবেশনায় অংশ নেয় পাকিস্তানের হিনা নাসরুল্লাহ, মালির হাবিব কইটে অ্যান্ড বামাদা, বাংলাদেশের কাজল দেওয়ান, বাউল শিল্পী ও গবেষক ফকির শাহাবুদ্দিন এবং ২০১৬ সালে সান ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত ‘ম্যাজিক বাউলিয়ানা’ প্রতিযোগিতা থেকে পরিচিতি পাওয়া শফিকুল ইসলাম ও কামরুজ্জামান রাব্বি। আজ শনিবার সমাপনী দিনে ফোক ফেস্ট মাতাবেন যারা, জেনে নিন তাদের সম্পর্কে।
পাকিস্তানের জুনুন
উপমহাদেশের সঙ্গীতপ্রেমীদের কাছে ভীষণ জনপ্রিয় পাকিস্তানের জুনুন। সুফি ঘরানার গান পরিবেশন করে দুই যুগের বেশি সময় ধরে শ্রোতাদের আবিষ্ট করে রেখেছে এ ব্যান্ডদলটি। ১৯৯৭ সালে নিজেদের চতুর্থ অ্যালবাম ‘আজাদি’ দিয়ে উপমহাদেশজুড়ে ঝড় তোলে। অ্যালবামটি ৩০ মিলিয়নের বেশি কপি বিক্রি হয়। অ্যালবামটির প্রথম গান ‘সাইওনি’ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের শ্রোতাদের কাছে ভীষণ জনপ্রিয়তা পায়। ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ফোক ফেস্টের সমাপনী দিনের অন্যতম আকর্ষণ এই শিল্পী।
রাশিয়ার সাত্তুমা
রাশিয়ার কারেলিয়া অঞ্চলের জনপ্রিয় ব্যান্ডদল সাত্তুমা। একই পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ২০০৩ সালে দলটি গড়া হয়। মঞ্চে নানা ধরনের ইনস্ট্রুমেন্ট বাজিয়ে শ্রোতাদের আবিষ্ট করেন সাত্তুমার সদস্যরা। নিও ফোক ঘরানার গান নিয়ে সাত্তুমা ঘুরে বেড়িয়েছে ইউরোপের নানা প্রান্তে। মঞ্চে নানা ধরনের বাদ্য ও সুরযন্ত্র বাজিয়ে দর্শক-শ্রোতাকে সম্মোহিত করে রাখে দলটি। রাশিয়ার বাইরে অনেক দেশেই রয়েছে তাদের জনপ্রিয়তা। ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ফোক ফেস্টের সমাপনী দিনের অন্যতম চমক হবে এ দলটির পরিবেশনা।
বাংলাদেশের চন্দনা মজুমদার
রাধারমণ দত্ত, হাসন রাজা, শাহ আবদুল করিমসহ বিভিন্ন বাউল ও লোককবির গান করেন চন্দনা মজুমদার। তবে লালন গানের শিল্পী হিসেবে তার আলাদা খ্যাতি রয়েছে। কুষ্টিয়ার গড়াই নদের পারে তার জন্ম। বাবা নির্মলচন্দ্র মজুমদার লালনগীতির শিল্পী হলেও তিনি চেয়েছিলেন মেয়ে যেন নজরুলের গান করেন। কিন্তু চন্দনা লোক গানে হয়ে ওঠেন বাংলাদেশের অগ্রগণ্য শিল্পী। ২০০৯ সালে তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। এবারের উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ চন্দনা মজুমদার। লালন, শাহ আব্দুল করিমসহ বিভিন্ন শিল্পীর লোক গানে উৎসব মাতাবেন তিনি।
মালেক কাওয়াল
বাংলাদেশের কাওয়ালি গানের খ্যাতিমান শিল্পী মালেক কাওয়াল। চার দশকের বেশি সময় ধরে তিনি কাওয়ালি গান গেয়ে শ্রোতাদের মাঝে নিজের আলাদা একটি জায়গা তৈরি করে নিয়েছেন। মালেক কাওয়ালের গানে হাতেখড়ি তার গুরু মহীন কাওয়ালের কাছে। পরে ওস্তাদ টুনু কাওয়ালের কাছে তালিম নেন। কাওয়ালি গানের পাশাপাশি তিনি মাইজভাণ্ডারি গানেও পারদর্শী। ঢাকা ইন্টারন্যাশাল ফোক ফেস্টের সমাপনী দিনের পরিবেশনায় মালেক কাওয়ালের গান ভিন্ন মাত্রা যোগ করবে।