• ঢাকা, বাংলাদেশ

ল্যাম্বরগিনি বানালেন নারায়ণগঞ্জের আকাশ 

 admin 
14th Jun 2019 12:48 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের পাশের একটি অটোরিকশা ওয়ার্কশপে তৈরি হয়েছে ‘ল্যাম্বরগিনি’র আদলে গাড়ি। গাড়িটি ঘণ্টা ৪৫ কিলোমিটার বেগে প্রায় ১০ ঘণ্টা পাড়ি দিতে সক্ষম। আর এটি তৈরি করেছেন ফতুল্লার লামাপাড়া গ্রামের আকাশ আহমেদ।

আকাশ ওই গ্রামের মো. নবী হোসেনের ছেলে। তার ছোট বেলা থেকেই শখ ছিল নিজের তৈরি গাড়িতে চড়বে। গাড়ি তৈরিতে সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে তার।

স্বপ্নের শুরু দেড় বছর আগে। অটোরিকশা নির্মাণের গ্যারেজ থেকে বডি তৈরি করতে করতে এক সময় আকাশ তার বাবার কাছে প্রস্তাব দিল গাড়ি বানাবে সে। বাবা না করতে গিয়েও চিন্তা করল ছেলেটাই সবচেয়ে বেশি কাজ করে পুরো ওয়ার্কশপে। না করে দিলে হয়ত মন খারাপ করে কাজে মন দিবে না। তাই অনিচ্ছা সত্ত্বেও ছেলেকে অনুমতি দিল গাড়ি নির্মাণের।

আর সেই থেকেই যাত্রা শুরু। ক্যালেন্ডারের পাতায় ইতালির বিখ্যাত গাড়ি প্রতিষ্ঠান ল্যাম্বরগিনি গাড়ির মডেল দেখেই সেটিকে অনুসরণ করে সামনে এগোতে থাকে সে। বাবার কাছ থেকে প্রতিদিন এক-দুইশ টাকা নিয়েই কাজ শুরু করা। ইউটিউব থেকে টিউটোরিয়াল ফলো করা। জাহাজ কাটার অভিজ্ঞতা থেকে ইস্পাতের পাত কেটে গাড়ির বডির শেপ তৈরি করা। ল্যাম্বরগিনির আদলে গাড়ির নকশা প্রণয়ন। নির্মাণ, জোড়াতালি সবই নিজের হাতে তৈরি।

আকাশ বলেন, গাড়ির চাকা আর স্টিয়ারিং হুইলটাই কেবল কিনে আনা হয়েছে। বাকি সবকিছু নিজের হাতে তৈরি। চাকার সাসপেশন, হেডলাইট ব্যাকলাইট, গিয়ার, এসবও আমার নিজের হাতে তৈরি করেছি। যা অনেকের কাছেই বিশ্বাসযোগ্য নয়। প্রায় দেড় বছরের টানা প্রচেষ্টায় সেটি পূর্ণাঙ্গ গাড়িতে পরিণত হয়েছে।

তিনি বলেন, গাড়িটিতে প্রায় পাঁচটি ব্যাটারি লাগানো হয়েছে। যেটি প্রায় ১০ ঘণ্টা চলতে সক্ষম। আর এই ব্যাটারি পূর্ণ চার্জ হতে লাগবে ৫ ঘণ্টা। আর সড়কে নামলে দুজন আরোহীকে নিয়ে ঘণ্টা ৪৫ কিলোমিটার বেগে ছুটতে পারবে। আর পুরো গাড়িটি এই অবস্থায় দাঁড় করাতে ব্যয় হয়েছে সাড়ে তিন লাখ টাকা। তবে গাড়ির বডি কার্বন ফাইবারে নিয়ে এলে তিন লাখ টাকাতেও বানানো যাবে।

আকাশ আরো বলেন, গাড়িটির দেড় বছরে প্রতিনিয়তই সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছে। পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকায় অনেকটা অনুমান নির্ভর করেই পাড়ি দিতে হয়েছে অধিকাংশ পথ। কিন্তু লক্ষ্য ছিল একটাই। আর সে কারণেই গাড়িটি তৈরি করতে পেরেছি। ছোটবেলার স্বপ্ন বাস্তবায়ন শুরু যেহেতু করেছি তাই শেষ করার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করেছি। ঈদের ছুটিতে গাড়িটি নামানোর পরেই অসাধারণ সাড়া পেয়েছি। কেউ কেউ হিংসায় বাজে মন্তব্য করলেও তাতে পাত্তা দেইনি। নিজের পরিশ্রমে তৈরি করেছি গাড়িটি। তবে গাড়িটিতে আরো কিছু কাজ বাকি আছে। যেমন গাড়ির দরজাগুলো সুইচের মাধ্যমে খুলবে ও বন্ধ হবে।

আকাশের বাবা নবী হোসেন বলেন, আমার ছেলে এই গাড়ি বানিয়েছে এটা এখনো এলাকার অনেকেই বিশ্বাস করতে চায় না। আমি তাদের বলিও না তারা বিশ্বাস করুক। কিন্তু আমার ছেলের ওপর হিংসা করে তার ক্ষতি যাতে না করে এই অনুরোধ রাখি। অনেকেই এসে বিরক্ত করে ছেলেকে। এরইমধ্যে একজন গাড়ি জোর করে চালাতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটায়। এতে গাড়ির সামনের কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ছেলে দুদিন ধরে কষ্টে খায়নি কিছু।

গাড়িটি নিয়ে পরবর্তী লক্ষ্য কি জানতে চাইলে আকাশ বলেন, আমি সরকারের কাছে অনুরোধ করব যাতে গাড়িটি বাজারজাত করার অনুমতি দেয়। অন্য কারো কাছে আমি এটির নকশা বিক্রি করতে চাই না। শুরু অনুমতি দিলেই আমার জন্য অনেক উপকার হবে। দেশীয় প্রযুক্তি ও পরিবেশ বান্ধব গাড়িটি দেখে আমি আরো ২৫ টি গাড়ি তৈরির অর্ডার পেয়েছি। বাজারজাত করলে চার থেকে সাড়ে চার লাখ টাকাতেই মানুষ পরিবেশবান্ধব এই গাড়ি ব্যাবহার করতে পারবে। ব্যক্তিগতভাবে আরেকটি গাড়ি বানানোর ইচ্ছে আছে। তবে সেটির মডেল আপাতত অপ্রকাশিতই থাকুক।

Array
We use all content from others website just for demo purpose. We suggest to remove all content after building your demo website. And Dont copy our content without our permission.
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
এই বিভাগের আরও খবর
 
Jugantor Logo
ফজর ৫:০৫
জোহর ১১:৪৬
আসর ৪:০৮
মাগরিব ৫:১১
ইশা ৬:২৬
সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১