শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের মধ্যকার ম্যাচটি পরিত্যক্ত হওয়ায় কিছুটা হতাশ। লঙ্কানদের এখন যে অবস্থা তাতে ম্যাচটিতে বাংলাদেশের জেতার বেশ ভালো সম্ভাবনা ছিল। দিমুথ করুনারত্নের দলকে হারিয়ে ২ পয়েন্ট পেলে শেষ চারে যাওয়ার পথটা কিছুটা সহজ হয়ে উঠত টাইগারদের জন্য। যাই হোক, এখন এসব নিয়ে ভেবে লাভ নেই। বৃষ্টির ওপর তো আর কারো হাত থাকে না। আমাদের পরের ম্যাচ উইন্ডিজের বিপক্ষে। ম্যাচটি জেতা খুব জরুরি। ক্যারিবীয়দের হারাতে না পারলে আমরা সেমিফাইনালে যাওয়ার দৌড় থেকে অনেকটাই ছিটকে পড়ব। ম্যাচটি হবে আগামী সোমবার। সে হিসেবে হাতে বেশ কয়েকদিন সময় আছে। এতে আমাদের জন্য বেশ ভালোই হলো। কেননা, শ্রীলঙ্কা ও উইন্ডিজ পুরো ভিন্ন ধাঁচের ক্রিকেট খেলে। মাশরাফি বিন মুর্তজার দলের ভাবনায় গত কয়েকদিন ধরে কেবলই লঙ্কা বধের পরিকল্পনা ছিল। আর এখন সামনের কয়েকদিন ক্যারিবীয়দের হারানোর ছক কষবে আমাদের ক্রিকেটাররা।
উইন্ডিজের বিপক্ষে বাড়তি দায়িত্ব নিতে হবে আমাদের স্পিনারদের। বিশেষ করে মেহেদী হাসান মিরাজকে। কারণ ক্রিস গেইল-আন্ড্রে রাসেলদের অফস্পিনে দুর্বলতা আছে। গেইলকে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে দেয়া যাবে না। কারণ তিনি ব্যাট হাতে ঝড় তুললে ম্যাচ আমাদের হাতছাড়া হতে বেশিক্ষণ সময় লাগবে না। তাই লক্ষ্য রাখতে হবে গেইলকে যেন খুব তাড়াতাড়ি সাজঘরে ফেরানো যায়। সেটা যত দ্রুত সম্ভব হবে ততই বাংলাদেশ দলের জন্য শ্রেয়। আমাদের দলে এখন দুজন স্পিনার আছেন। সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজ। গেইল বাঁ-হাতি স্পিনারদের বিপক্ষে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যেই ব্যাট করেন। তাই আমার মনে হয় সাকিব ভাইয়ের চেয়ে মিরাজই বেশি কার্যকর হবেন। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ভাই দলে আছেন। তবে আঙুলের ইনজুরির কারণে বল করতে পারছেন না। এ কারণে মিরাজকে বাড়তি দায়িত্ব নিতে হবে। কারণ আমাদের দলে মিরাজই একমাত্র ডানহাতি অফ স্পিনার। অবশ্য মোসাদ্দেক হোসেনকেও কাজে লাগানো যায়।
আয়ারল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে উইন্ডিজকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশ। এর আগে গ্রুপ পর্বের দুটি ম্যাচেও ক্যারিবীয়দের হারিয়েছে টাইগাররা। আমার মনে হয়, সেটা এই ম্যাচে খুব একটা প্রভাব ফেলবে না। কারণ গেইল-রাসেলরা ত্রিদেশীয় সিরিজে খেলেননি। তারা আসায় উইন্ডিজের শক্তিমত্তা বেড়েছে। এসব বিষয় মাথায় রেখেই ম্যাচ পরিকল্পনা সাজানো উচিত বাংলাদেশের।
বিশ্বকাপের আজকের ম্যাচে ভারতের মুখোমুখি হচ্ছে নিউজিল্যান্ড। দুদলই এখন পর্যন্ত খেলা সবকটি ম্যাচে জয় পেয়েছে। তবে আমি এই ম্যাচে কিউইদের চেয়ে বিরাট কোহলির নেতৃত্বাধীন ভারতকে এগিয়ে রাখব। দলটি ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং তিন বিভাগেই দারুণ ভারসাম্যপূর্ণ। ইনজুরির কারণে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেঞ্চুরি হাঁকানো শিখর ধাওয়ান এ ম্যাচে খেলবেন না। তবে আমার মনে হয় এটা ভারতের জন্য তেমন বড় কোনো সমস্যা নয়। ধাওয়ানের শূন্যস্থান পূরণ করার মতো বিকল্প ক্রিকেটার ভারতের স্কোয়াডে রয়েছে। ভারত এখন পর্যন্ত দুটি ম্যাচে জিতেছে। যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ ছিল যথাক্রমে দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়া। প্রোটিয়া ও অজিদের হারিয়ে কোহলির দল তাদের শক্তিমত্তার পরিচয় দিয়েছে। অন্যদিকে নিউজিল্যান্ডের আসল পরীক্ষাটা হবে আজ। তারা এখন পর্যন্ত যে তিনটি ম্যাচ জিতেছে সেগুলোতে প্রতিপক্ষ ছিল শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান। এবারের শ্রীলঙ্কা দলটি বেশ দুর্বল। আর আফগানিস্তান র্যাঙ্কিংয়ের ১০ নম্বরের দল। বাংলাদেশের বিপক্ষে মাত্র ২ উইকেটে জিতেছে তারা। টাইগাররা ফিল্ডিংয়ে কিছু ভুল না করলে ওই ম্যাচের ফল উল্টোটাও হতে পারত। সবকিছু বিবেচনা করে, আমার দৃষ্টিতে আজকের ম্যাচে ভারতই ফেভারিট।