• ঢাকা, বাংলাদেশ

হাইপারলুপঃ ভবিষ্যতের পরিবহন ব্যবস্থা! 

 admin 
18th Nov 2018 5:55 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

আবদুল্লাহ আল মুনতাসির: ছোটবেলায় দা জেটসন্স কার্টুন কয় জন দেখেছেন বা এখনো কাদের মনে আছে কার্টুনটা তা আমার জানা নেই, তাই কিছুটা আইডিয়া দিয়ে দেই। অত্যাধুনিক সব প্রযুক্তি নিয়ে ছিল কার্টুনটা যেখানে এমন সব জিনিস দেখা যেতো যা ওই সময় থাকা এক রকম অসম্ভব ছিল। সেখানে একটা টিউব ব্যবস্থা দেখা যায় যার মধ্যে ঢুকে এক রকম ভ্যাকিউম শক্তির সাহায্যে দ্রুত এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় চলে যেত কার্টুন চরিত্র গুলো। আজকে আমরা এমনই একটা প্রযুক্তি নিয়ে কথা বলব।

হাইপারলুপ একটি ধারনা যা বাস্তবায়ন এর জন্য অনেক গুলো কোম্পানি এখন দিনরাত মেহনত করে যাচ্ছে। কি এই হাইপারলুপ? সাম্প্রতিককালের হাইপারলুপ ধারনাটি “রিয়াল লাইফ আয়রন ম্যান’
ইলন মাস্ক থেকে আসে ২০১৩ সালে। যেখানে ট্রেনের বগির মত ছোট ছোট কম্পার্ট্মেন্ট থাকবে। মানুষ সেটাতে চরে দ্রুত গতিতে চলে যাবে তার গন্তব্য স্থলে। কতটা দ্রুত? থিওরিটিকালি ৭০০ মাইল প্রতি ঘণ্টা আশা করছেন বর্তমান নির্মাতারা।
কিভাবে এত গতিবেগ পাবে এই ছোট ছোট বগি গুলো, যেখানে বর্তমান এর সবচেয়ে দ্রুত গতির ট্রেন “সাংহাই ম্যাগ্লেভ ” এর গতি ই ২৬৭ মাইল প্রতি ঘণ্টা?

এটা জানতে হলে আমাদের প্রথমে বুঝতে হবে ম্যাগ্লেভ বা ম্যাগ্নেটিক লেভিটেশন কি জিনিস। খুবী সহজভাবে বললে, ম্যাগ্নেট বা চুম্বক শক্তির সাহায্যে ভাসমান অবস্থায় রাখা হয় কোন বস্তুকে। এর ফলে সাধারণ ট্রেন এর লোহার চাকায় যে ঘর্ষণ সৃষ্টি হয়, তা আর এখানে হয়না এবং ঘর্ষণ সৃষ্টি না হওয়াতে এটা দ্রুতগতি লাভ করে। এই ম্যাগ্লেভ প্রযুক্তি ব্যবহার করেই “সাংহাই ম্যাগ্লেভ ” এই গতি অর্জন করে। কিন্তু এখানে আরেকটি বাধা থেকে যাচ্ছে যা এই ট্রেন এর গতি ২৬৭ মাইল পর্যন্তই রাখছে। বাতাস এই গতিরোধ এর কারণ হয়ে দাড়ায় তাই এই হাইপারলুপ ধারণাটির আবির্ভাব। এখানে বাতাসকে গতিরোধ এর জায়গায় গতি বৃদ্ধি এর জন্য ব্যবহার করার উপযোগী করার চেষ্টা করা হচ্ছে এই ভ্যাকিউম টিউব এর সাহায্যে। হাইপারলুপ এর ছোট ছোট বগি গুলো বর্তমান প্রযুক্তি এর সাহায্যে এমন ভাবে ডিজাইন করা হবে যেন খুবই সরু এই টানেলে এই বগি গুলো দ্রুত চলার সময় বাতাস গতিরোধ এর কারণ না হয়ে দাড়ায়।

ভ্যাকিউম ট্রেন এর জনক যদিও “রবার্ট হাচিংস গডার্ড” কে বলা যেতে পারে কারণ এই আইডিয়াটি ১৯০০ সালের শুরুর দিকে তার কাছথেকেই আসে। কিন্তু ওই সময় পর্যাপ্ত প্রযুক্তির অভাবে তা বাস্তবায়ন বা চিন্তা করাও এক রকম অসম্ভব ই থাকে। পরবর্তীতে ১৯৭২ সালের দিকে “র্যান্ড কর্পরেশন” আবারো এই ভ্যাকিউম ট্রেন বানানোর চেষ্টা করে এবং তখনকার প্রযুক্তি দিয়ে এক রকম ভ্যাকিউম ট্রেন বানিয়েও ফেলে, কিন্তু মানুষের এই প্রযুক্তি সম্পর্কে ধারনা না থাকায় এই চেষ্টাও বিফলে যায়।

এই ধারণাকেই আবারো নতুন করে আমাদের কাছে তুলে ধরেন আমেরিকার টেসলা, স্পেস এক্স এবং দা বোরিং কোম্পানি এর মালিক; উদ্যোক্তা ইলন মাস্ক। শুরুর দিকে টেসলা ও স্পেস এক্স নিয়ে ব্যস্ত থাকার কারণে ইলন তার আইডিয়া সবাইকে জানিয়ে উৎসাহ দেন এটা বাস্তবায়ন করতে। অনেক গুলো কোম্পানি আজও দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে হাইপারলুপ বানাতে যাদের মধ্যে “ভার্জিন হাইপারলুপ ১” ও “হাইপারলুপ ট্রান্সপোর্টেশন টেকনোলোজিস” উল্লেখযোগ্য। ব্যস্ততা কমে এলে ২০১৭ সালে ইলন মাস্ক তার নিজের “দা বোরিং কোম্পানি” এর সহায়তায় “হাইপারলুপ আলফা” বানানোর কথা জানিয়ে দেন।

টুইটার এ ইলন মাস্ক গত ২২ অক্টোবর ২০১৮, জানিয়ে দেন যে প্রাথমিক পর্যায়ে লস আঞ্জেলেস এ ২ মাইল দীর্ঘ একটি টানেল তৈরি করেছে তার বোরিং কোম্পানি যা আগামী ১০ ডিসেম্বর রাতে আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্ভোধন করা হবে এবং পরবর্তী দিন বিনা খরচে মানুষকে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে।

শেষ পর্যন্ত কতটুকু নিরাপদ হবে বা সব রকম আইনি বাধা বিপত্তি পার করে এটা তৈরি হয়ে সাধারণ মানুষের ব্যবহার উপযোগী হবে কি না তা সময় ই বলে দিবে। কিন্তু এটিই এখন আমাদের পরিবহন ব্যবস্থার ভবিষ্যৎ বলে আমরা আশা করতে পারি।

ইলন মাস্কের হাইপারলুপের প্রস্তাবিত আইডিয়ার উপর ওয়েন ডেরিকের বানানো ভিভিও লিংক  নিচে দেওয়া হলো:

https://l.facebook.com/l.php

Array
We use all content from others website just for demo purpose. We suggest to remove all content after building your demo website. And Dont copy our content without our permission.
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
এই বিভাগের আরও খবর
 
Jugantor Logo
ফজর ৫:০৫
জোহর ১১:৪৬
আসর ৪:০৮
মাগরিব ৫:১১
ইশা ৬:২৬
সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১