
২৪ ঘণ্টা ধর্মঘটে নেমেছে ঢাকা রাইড শেয়ারিং ড্রাইভারস ইউনিয়ন এবং বাংলাদেশে রাইড শেয়ারিং ড্রাইভার্স অ্যাসোসিয়েশন নামক বাংলাদেশে উবারচালকদের দুটি সংগঠন।
উবারের ‘নানা অনিয়মের’ প্রতিবাদে ৯ দফা দাবিতে রোববার মধ্যরাত থেকে গাড়ি চালানো বন্ধ রেখেছেন তারা।
তাদের এ ধর্মঘট সোমবার রাত ১২টা পর্যন্ত চলবে জানিয়ে বাংলাদেশে রাইড শেয়ারিং ড্রাইভারস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নানা অনিয়ম ও উবারচালকদের ন্যায্য দাবি আদায়ে এ ধর্মঘট পালিত হচ্ছে। এ কর্মসূচির পরও দাবি না মানলে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
রোববার রাতে এক গণমাধ্যমকে এ কথা বলেন বাংলাদেশে রাইড শেয়ারিং ড্রাইভারস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শুভ আহমেদ।
তিনি বলেন, গত ছয় মাস ধরে এ দাবি করে আসছি আমরা। সে দাবি আদায়ে রোববার মধ্যরাত থেকে কর্মসূচি শুরু হয়েছে। উবারের অ্যাপ ব্যবহার করে চলাচলকারী মোটরকার ও মোটরসাইকেল এ কর্মসূচির আওতায় থাকবে। এ দাবির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে কর্মসূচিতে যোগ দিতে আমরা চালকদের আহ্বান জানাচ্ছি।
উবারচালকদের দাবিগুলো পড়ে শোনান শুভ আহমেদ।
দাবিগুলো হচ্ছে- ১. খেপ শুরু করার পর থেকে শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিলোমিটার ও মিনিট হিসাব করে ভাড়া দিতে হবে।
২. উবারের কমিশন ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১২ শতাংশ করতে হবে।
৩. গ্যাসের দাম বাড়ার কারণে ভাড়ার হার বাড়াতে হবে।
৪. ডেস্টিন্যাশন অপশনে ডেস্টিন্যাশনের আশপাশে খেপ দিতে হবে। ৫. চালকদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে, যাত্রীদের দ্বারা গাড়ির কোনো ক্ষতি হলে তার ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে।
৬. যাত্রীদের করা অভিযোগ যাচাই না করে চালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যাবে না
৭. যাত্রীর অ্যাকাউন্টে যাত্রীর ছবি থাকা বাধ্যতামূলক করতে হবে ৮. যাত্রীকে লোকেশন সম্পর্কে প্রাথমিক প্রশিক্ষণ দিতে হবে।
৮. চালকের সঙ্গে যাত্রীর সংযোগ দূরত্ব সর্বোচ্চ দুই কিলোমিটার করতে হবে।
৯. দৈনিক ১২ ঘণ্টার বেশি উবারে অনলাইন না থাকার নিয়ম চালু করতে হবে।
গত ছয় মাস ধরেই এই ৯ দাবি নিয়ে উবারের সঙ্গে কয়েক দফা আলোচনার পরও তা মেনে নেয়া হয়নি বা কোনো প্রতিশ্রুতিও দেয়া হয়নি বলে জানান ঢাকা রাইড শেয়ারিং ড্রাইভারস ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক বেলাল আহমেদ।
তিনি বলেন, আমরা উবারের ঢাকা অফিসে গিয়েছিলাম। এ নিয়ে দুই বার বসাও হয়েছে। দাবির বিষয়ে কোনো সমাধান না হওয়ায় উত্তরায় উবার অফিসের সামনে ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছি। কিন্তু তার পরও দাবিগুলোর দিকে তারা চোখও বোলাননি। তারা কোনো ব্যবস্থাই নেননি।
সেসব বৈঠকে বাংলাদেশ উবারের বক্তব্য কি জানতে চাইলে বেলাল আহমেদ বলেন, সেই সময় তারা শ্রেফ না করে দিয়েছিলেন। তারা বলছেন, উবারের সব সিদ্ধান্ত ভারত থেকে আসে, এখানে বসে তারা কোনো সিদ্ধান্ত দেয়ার ক্ষমতা রাখেন না।
এদিকে ৯ দফা দাবিতে এ ধর্মঘটের বিষয়ে এক বিবৃতিতে উবারের এক মুখপাত্র বলেন, এটি একটি যাত্রীসেবা প্রতিষ্ঠান। তাই এসব ধর্মঘট অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক। যাত্রীরা যাতে স্বচ্ছন্দ্যে ও কোনোরকম ঝামেলা ছাড়া ঢাকায় চলাফেরা করতে পারেন সেদিকে দৃষ্টি রয়েছে উবারের। তবে চালকদের যেন একটি স্থিতিশীল আয় হয়, সে জন্য সেবা চালিয়ে যেতে উবার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলেও জানান তিনি।
প্রসঙ্গত ২০১৬ সালে বাংলাদেশে উবারের যাত্রা শুরু হয়। যানজটের শহর ঢাকায় মোবাইল অ্যাপভিত্তিক রাইড শেয়ারিং সেবা দ্রুত জনপ্রিয়তা পায়। এর পর পাঠাও, ওভাই, পিকমি, স্যাম, সহজের মতো আরও কয়েকটি রাইড শেয়ারিং কোম্পানি চালু হয় ঢাকাতে।
Array