• ঢাকা, বাংলাদেশ

কর্মসংস্থানই আগামী দিনের বড় চ্যালেঞ্জ 

 admin 
19th Jul 2020 12:14 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

করোনা সঙ্কটে কাজ হারাচ্ছে অনেক মানুষ। বাড়ছে দারিদ্র্য। তাই নতুন কর্মসংস্থানের মাধ্যমে দারিদ্র্য কমিয়ে এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনই বাংলাদেশের সামনে এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
সাসটেইনেবল ডেভেলমেন্ট গোলের (এসডিজি) সময়সীমা ২০৩০ সাল। আর তার ১৭টি লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে দুটি হলো দারিদ্র্য নিয়ে। প্রথমত, দারিদ্র্য শূন্যে নামিয়ে আনতে হবে। আর কোনো মানুষ অভুক্ত থাকতে পারবে না। কিন্তু সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) বলছে,  বাংলাদেশে দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাবে প্রায় ৪১ ভাগ মানুষ। ২০১৯ সালে এটা ছিল ২০ দশমিক ৫ ভাগ। ডয়চে ভেলে। বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি বলছে, ২৬ মার্চ থেকে ৩০ মের মধ্যে সাধারণ ছুটির সময় বাংলাদেশের তিন কোটি  ৬০ লাখ মানুষ কাজ হারিয়েছেন। সানেমের নির্বাহী পরিচালক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সেলিম রায়হান বলেন, ‘মানুষ কাজ হারিয়েছে, আয় কমে গেছে, শহর ছেড়ে মানুষ গ্রামে চলে যাচ্ছে, সবকিছু মিলিয়ে দারিদ্র্য বিমোচনে আমাদের গত দেড় দশকে যে অর্জন তা বড় ধরনের হুমকির মুখে পড়েছে।’
আর এ কারণে ২০৩০ সালের মধ্যে দারিদ্র্য জিরো লেভেলে নামিয়ে এনে এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন অসম্ভব হয়ে পড়বে বলে মনে করেন তিনি।
বাংলাদেশ এখন কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা ছয় কোটিরও বেশি। বিআইডিএস-এর সম্প্রতি জরিপে বলা হচ্ছে, করোনায় এক কোটি ৬৪ লাখ মানুষ নতুন করে গরিব হয়েছে, দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে গেছে। তাই এখন দেশে গরিব মানুষের সংখ্যা পাঁচ কোটিরও বেশি। ১৩ ভাগ মানুষ ফরমাল সেক্টর থেকে চাকরি হারিয়েছেন। দারিদ্র্য বেড়েছে ২৫ দশমিক ১৩ ভাগ। এ দারিদ্র্য বাড়ার হার শহরে বেশি। ১৫-২০ ভাগ মানুষ দারিদ্র্য রেখার খুব কাছে অবস্থান করে। সেই সংখ্যাটাও তিন কোটির মতো। তারাই এখন দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যাচ্ছে।
এসডিজিতে দারিদ্র্য ৫০ ভাগে নামিয়ে আনার কথা ছিল। কিন্তু বাংলাদেশ সেটা ২০ ভাগে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার প্রথম সোপান পার হয়ে আসে। ২০২১ সালে বাংলাদেশকে আরেকবার পরীক্ষা দিতে হবে। এরপর জাতিসংঘের সূচক অনুযায়ী ২০২৪ সালে বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার কথা। কিন্তু সেটাও এই করোনার কারণে  সম্ভব হবে বলে মনে করেন না বিআইডিএসের অর্থনীতিবিদ ড. নাজনীন আহমেদ। তিনি মনে করেন, ‘করোনায় কাজ হারিয়ে মানুষ দরিদ্র অবস্থার মধ্যে পড়ছে। তাই শুধু খাদ্য সহায়তা নয়, মানুষের কাজের ব্যবস্থা করতে হবে।’
সরকার এবার সামাজিক সুরক্ষা খাতে এক হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। শিল্প খাতে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। প্রবাসী যারা ফিরে আসছেন, তাদের জন্য ৭০০ কোটি টাকা স্বল্প সুদে ঋণ দিচ্ছে। কর্ম সংস্থানের জন্য ১৭ হাজার কোটি টাকার আরেকটি প্রকল্পের কাজ চলছে। সংসদ সদস্যদের জন্য এলাকার কাজে ছয় হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ড. নাজনীন বলেন, ‘এমপিদের টাকা যাতে কর্মসংস্থানের কাজে ব্যয় হয় তার জন্য গাইডলাইন দিতে হবে।’
মানুষ শুধু কাজ হারিয়ে দরিদ্রই হচেছ না। এর সঙ্গে পেশারও পরিবর্তন হচ্ছে। অর্থনীতিবিদ ডা. আহসান এইচ মনসুর মনে করেন, শিল্পের ধারণা পাল্টে যাবে। উৎপাদন খাতে পরিবর্তন আসবে। নতুন ধরনের কাজ ও পেশার সৃষ্টি হবে। তার জন্য মানুষকে এখনই প্রস্তুত করতে হবে।
তিনি মনে করেন, দারিদ্র্য নতুন করে যত বাড়ছে, তা কাটিয়ে ওঠা খুব সহজে সম্ভব হবে না। সরকারের যে উদ্যোগ এখন পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে তা হতদরিদ্র মানুষের জন্য খাদ্য সহায়তা। এটার দরকার আছে। পোশাক খাতে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু যে বিপূলসংখ্যক মানুষ কাজ হারিয়েছে, তাদের কাজ দেওয়া বা বিকল্প কর্ম সংস্থানের কোনো উদ্যোগ নাই।
ড. সেলিম রায়হান মনে করেন, যারা কাজ হারিয়েছেন এবং যারা নতুন করে দরিদ্র হয়েছেন, সরকারে উদ্যোগে তাদের জন্য কিছু নেই। কিন্তু সেটাই এখন বেশি প্রয়োজন। ২০৩০ সালে এসডিজির যে সময় বেঁধে দেওয়া সেই সময় আরও না বাড়ালে বাংলাদেশ লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হবে না। আর ২০২৪ সালে উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার যে সময়সীমা তা-ও বাড়ানো দরকার বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা।

Array
We use all content from others website just for demo purpose. We suggest to remove all content after building your demo website. And Dont copy our content without our permission.
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
এই বিভাগের আরও খবর
 
Jugantor Logo
ফজর ৫:০৫
জোহর ১১:৪৬
আসর ৪:০৮
মাগরিব ৫:১১
ইশা ৬:২৬
সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১