নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ডানেডিনের ইউনিভার্সিটি ওভালে শনিবার বাংলাদেশ সময় ভোর ৪টায় তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে মাঠে নামতে যাচ্ছে তামিম বাহিনী। আর এই ম্যাচটির মাধ্যমে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে এখনো না পাওয়া জয়ের স্বাদ পেতে খেলতে নামছে তামিম-মুশফিকরা। এখন পর্যন্ত সব ফরমেট মিলিয়ে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ২৬টি ম্যাচ খেলেছে টাইগাররা। কিন্তু জয় পাওয়া হয়নি একটিতেও।
শুক্রবার ম্যাচের আগে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে জয়ের খরা কাটানোর ব্যাপারটিই শোনা গেছে অধিনায়ক তামিম ইকবালের মুখ থেকে। তামিম বলেছেন, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ ও সিরিজ জয় করতে পারলে বিষয়টি হবে বেশ ভালো। বাংলাদেশ টেলিভিশন, গাজী টিভি ও টি স্পোর্টসে ম্যাচটি উপভোগ করা যাবে।
নিউজিল্যান্ডের মাটিতে এর আগে ১৩টি ওয়ানডে খেলেছে বাংলাদেশ। কিন্তু আগের ম্যাচগুলো ছিল দুই দলের মধ্যে সাধারণ ম্যাচ। কিন্তু এবারের সিরিজটি হলো আইসিসির ২০২৩ বিশ্বকাপের বাছাই পর্বের অংশ। যা ক্রিকেট ওয়ার্ল্ড কাপ সুপার লিগ নামে পরিচিত। ফলে কিউইদের বিপক্ষে এই সিরিজের সব ম্যাচ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ ঘরের মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজ দিয়ে এই সুপার লিগে তাদের যাত্রা শুরু করে অসাধারণ সাফল্য পায়। ক্যারিবিয়ানদের টাইগাররা হারায় ৩-০ ব্যবধানে। অন্যদিকে নিউজিল্যান্ড বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে সুপার লিগে তাদের যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে। আর বাংলাদেশের বিপক্ষে আজকের ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের তিনজন খেলোয়াড়ের ওয়ানডে অভিষেক হয়ে যেতে পারে। এর মধ্যে ডেভন কনওয়ে ও উইল ইয়ং খেলছেন নিশ্চিত। নিয়মিত অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন ও অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান রস টেলরের জায়গায় খেলবেন তারা। অন্যদিকে ডারেল মিচেলেরও অভিষেক হতে পারে। ডেভন কনওয়ে ও উইল ইয়ং দুজনই ভালো ব্যাটসম্যান। কনওয়ে তো টি-টোয়েন্টিতে নিজের সামর্থ্যরে প্রমাণ দিয়েই দিয়েছেন। আর নিউজিল্যান্ডের মাঠ যেহেতু পেস বান্ধব ফলে কিউইদের এই ব্যাটসম্যানদের রুখতে বাংলাদেশের পেসারদের জ্বলে উঠতে হবে এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। আর অধিনায়ক তামিমও বলেছেন এবার বাংলাদেশ যে পেসারদের নিয়ে কিউই সফরে গেছে তাদের সেই সামর্থ্য আছে।
এ ব্যাপারে তামিম বলেন, ‘সত্যি কথা আমাদের পেস বোলিং অ্যাটাক হয়তোবা আগে যতবার এসেছি তার চেয়ে ভালো অবস্থায় আছে। ভালো অবস্থায় আছে অবশ্যই ভালো করাও লাগবে, কিন্তু এতটুকু বলতে পারি যে এখন যে গ্রুপটা আছে পেস বোলারদের, তারা খুবই ভালো। দ্বিতীয়তো আমার কাছে যেটা গুরুত্বপূর্ণ মনে হয় বিদেশ সফরগুলোতে নিজের প্রতি বিশ্বাস। আমার কাছে মনে হয় যে দলে বিশ্বাস আছে তারা কিছু করতে চায়। তো ওইটাই আমি আশা করছি যে আমরা প্রথম ম্যাচ থেকেই যে লক্ষ্য আমাদের ভালো করার সেটা যেন আমরা ফুলফিল করতে পারি।’
জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী তামিম বলেন, ‘যেহেতু এখানে (নিউজিল্যান্ডে আগের সফরগুলোতে) আমরা ভালো কিছু করতে পারিনি, তো এখন ভালো কিছু করার সুযোগ আছে। আমরা যদি সিরিজ জিততে পারি তাহলে সেটা অসাধারণ একটি অর্জন হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের মধ্যে সেই জিনিসটা রয়েছে, আমাদের ভালো করতে হবে। আর সবচেয়ে যেটা গুরুত্বপূর্ণ, যখন আমি প্রত্যেকটা প্লেয়ারের সঙ্গে কথা বলি তখন দেখি তারা খুব পজেটিভ। এটা খুবই ভালো দিক। আমি যেটা বললাম, এটা কাজ করতে পারে, আবার নাও পারে। তবে আমার মনে হয় এখন আমরা খুবই আত্মবিশ্বাসী।’
উইলিয়ামসনের অনুপস্থিতিতে দলকে নেতৃত্ব দেবেন টম লাথাম। এই ম্যাচ তার শততম ওয়ানডে। তার আশা, দারুণ পারফরম্যান্সের ধারা ধরে রাখবে দল। বাংলাদেশকেও বেশ গুরুত্ব দিচ্ছেন বাঁ-হাতি এই ব্যাটসম্যান।
‘আমাদের জন্য এটি আরেকটি সুযোগ নিজেদের মেলে ধরার। দল এবার একটু আলাদা, কয়েকজন নতুন মুখ আছে। তবে ছেলেরা এ বছর লাল-সাদা, দুই বলেই দারুণ ক্রিকেট খেলছে। আশা করি, সেই ধারাবাহিকতা এই সিরিজেও থাকবে।’
বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ড এখন পর্যন্ত ৩৫টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ জয় পেয়েছে ১০ ম্যাচে। আর কিউইরা জয় পেয়েছে ২৫টি ম্যাচে। এর মধ্যে ঘরের মাটিতে টাইগাররা নিউজিল্যান্ডকে ২০১০ সালে ৪-০ ব্যবধানে ও ২০১৩ সালে ৩-০ ব্যবধানে জিতে হোয়াইটওয়াশ করে। বিশ্বকাপের রানার্সআপদের বিপক্ষে বাংলাদেশ সর্বশেষ ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে জয় পেয়েছিল। এরপর বিশ্বকাপসহ মোট ৪টি ম্যাচ খেলে ৪টিতেই হারে তামিম-মুশফিকরা।
Array