ঢাকা- ২২ অক্টোবর, শুক্রবার, ২০২১ইং: জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি বলেছেন, উসকানিমূলক হামলা থেকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মন্দির ও বাড়িঘর রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে গোয়েন্দা সংস্থা ও আইন শৃংখলা রক্ষা বাহিনী। গোয়েন্দা সংস্থা ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর ব্যর্থতা হচ্ছে সরকারেরই ব্যর্থতা। এই ব্যর্থতার দায় সরকারকে নিতেই হবে। তিনি বলেন, এদেশের মানুষের মাঝে হাজার বছরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্য রয়েছে। একই চত্ত¡রে মসজিদ ও মন্দির রয়েছে। কখনো নিজ নিজ ধর্ম পালনে সমস্যা হয়নি এদেশে। কিন্তু গেলো শারদীয় দুর্গা উৎসবে কেনো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হলো তা খতিয়ে দেখতে হবে। তিনি বলেন, হাজার বছরের সম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে ষড়যন্ত্র চলছে। কোন হিন্দু নিজ উৎসব বিনষ্ট করতে কোরআন অবমাননা করতে পারে না। আবার নূন্যতম ঈমান আছে এমন কোন মুসলমান কোরআন অবমাননা করতে পারেনা। যে বা যারা করেছে, তা গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। দ্রুততার সাথে সারা দেশে কোরআন অবমাননার খবর ছড়িয়ে দিয়ে উত্তেজনাকর পরিবেশ সৃষ্টি করেছে মহলটি, যেনো সবাই প্রস্তুত ছিলো। এতে প্রমান হয়, অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবেই হয়েছে কোরআন অবমাননার ষড়যন্ত্র।
আজ সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জাতীয় পার্টি ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আয়োজনে সম্প্রীতি সমাবেশে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি একথা বলেন।
জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্প্রীতি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরও বলেন, ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে আমাদের সম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্য প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে। এখন আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো নিন্দা জানাচ্ছে। তাই সকলকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে সম্প্রদায়িক ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে হবে। জাতীয় পার্টি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে সাম্প্রদায়িক ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে হবে। যারা সংখ্যালঘুদের শক্র তারা দেশ ও জাতির শক্র। দেশের মানুষ আর সাম্প্রদায়িক সংঘাত দেখতে চায়না। ধর্মের নামে আর সন্ত্রাস দেখতে চায়না দেশের মানুষ। তাই, এখনই সাম্প্রদায়িক ষড়যন্ত্র রুখে দাঁড়াতে হবে।
এসময় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরও বলেন, কারা ও কেন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে চাচ্ছে তা বের করতে হবে। দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে একজন প্রতিমন্ত্রী কেন রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম মানি না বলে আরও উত্তেজনা সৃষ্টি করে ধর্মপ্রাণ মানুষের অন্তরে আঘাত করেছে তাও খতিয়ে দেখতে হবে।
সভাপতির বক্তৃতায় জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি বলেছেন, পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছিলেন। তিনি হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টানদের জন্য পৃথক কল্যাণ ট্রাষ্ট গঠন করেছিলেন। শুভ জন্মাষ্টমিতে সরকারী ছুটি ঘোষণা করেছিলেন। মসজিদ, মন্দির সহ সকল উপসনালয়ের পানি ও বিদ্যুৎ বিল মওকুপ করেছিলেন। তিনি সকল ধর্মের সমান অধিকার নিশ্চিত করেছিলেন। সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা আরও বলেন, যারা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চাচ্ছে তারা কখনো সফল হবেনা। জাতীয় পার্টির প্রতিটি নেতাকর্মী সম্প্রীতি রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ থাকবে।
সম্প্রীতি সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য হাজী মো: সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, এড. মোঃ রেজাউল ইসলাম ভুইয়া, আলমগীর সিকদার লোটন, উপদেষ্টা জরিুল আলম রুবেল, ভাইস চেয়ারম্যান সালমা হোসেন, যুগ্ম-মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু, ফখরুল আহসান শাহজাদা, যুগ্ম-সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য আকতার হোসেন দেওয়ান, এমএ সোবহান, মো: মাশুকুর রহমান, সম্প্রীতি সমাবেশে সঞ্চালনা করেন- যুগ্ম-সাংগঠনিক সম্পাদক সুজন দে।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভরায়, উপদেষ্টা হারুন আর রশীদ, যুগ্ম-মহাসচিব মোঃ বেলাল হোসেন, সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য- নির্মল চন্দ্র দাস, এনাম জয়নাল আবেদীন, এমএ রাজ্জাক খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ইসহাক ভূঁইয়া, যুগ্ম সম্পাদক নূররুল হক নূরু, সমরেশ মন্ডল মানিক, কেন্দ্রীয় সদস্য- শামসুল হুদা মিয়া, রমজান আলী ভুইয়া, মেহেদী হাসান শিপন, কাওছার আহমেদ, মাওঃ মোঃ খলিলুর রহমান সিদ্দিকী, আব্দুস সালাম লিটন প্রমূখ।
Array