admin
02nd Feb 2021 3:03 pm | অনলাইন সংস্করণ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪র্থ উপাচার্য হিসেবে ড. মীজানুর রহমান এর দ্বিতীয় মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ১৯ মার্চ। এর মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনে আলোচনা শুরু হয়েছে পরবর্তী উপাচার্য কে হবেন? ড. মীজানুর রহমান তৃতীয় মেয়াদে আসবেন কিনা? রাজধানীর এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হওয়ার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ইউজিসি, শিক্ষা মন্ত্রনালয়, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরসহ বিভিন্ন জায়গায় লবিং তদবির শুরু করছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন নীলদল পরবর্তী উপাচার্যের জন্য নিজেদের মধ্যে ১৪ জনের একটি নামের তালিকা ইউজিসি, শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন জায়গায় জমা দিয়েছেন। এ তালিকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ডিন, সাবেক ডিন, শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, নীলদলের সাবেক ও বর্তমান নেতৃবৃন্দের নাম রয়েছে বলে জানা যায়।
এদিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দাবি রাজধানীর এই বিশ্ববিদ্যালয়টিতে নিজেদের মধ্য থেকেই উপাচার্য নিয়োগ দিতে হবে।
২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এই উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতে এখন বিশ্ববিদ্যালয়েই সিনিয়র যোগ্য শিক্ষক আছেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ১০৫ জন অধ্যাপক আছেন। গ্রেড-১ পদমর্যাদায় আছেন ২৬ জন। তাদের মধ্যে অনেকেই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ-উপাচার্য, ট্রেজারারসহ বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন।
২০০৫ সালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীব বিজ্ঞানের চেয়ারম্যান এ. কে. এম. সিরাজুল ইসলাম খান প্রথম উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড.মীজানুর রহমান ৪র্থ উপাচার্য হিসাবে যোগদান করেন। ২০১৭ সালের ২০ মার্চ তিনি আবার দ্বিতীয় মেয়াদে যোগদান করেন। ড.মীজানুর রহমান তৃতীয় মেয়াদে থাকবেন কিনা এ নিয়ে একটি গুঞ্জন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীদের মধ্যে চলছে। উপাচার্যপন্থী গুটি কয়েক শিক্ষক তাকে আবার উপাচার্য হিসাবে চান। তবে দুই মেয়াদের বেশি আর কাউকে এ পদে নিয়োগ দেওয়া হবে না- সরকারের নীতিনির্ধারণী মহল এ রকম একটি নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন নীল দল পরবর্তী উপাচার্যের জন্য নিজেদের মধ্যে এক ডজনের বেশি একটি নামের তালিকা ইউজিসি,শিক্ষা মন্ত্রনালয়সহ বিভিন্ন জায়গায় দিয়েছেন। এ তালিকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ডিন,সাবেক ডিন,শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, নীল দলের সাবেক ও বর্তমান নেতৃবৃন্দের নাম রয়েছে। এছাড়াও কয়েকজন শিক্ষক ব্যক্তিগতভাবে শিক্ষা মন্ত্রনালয়,প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের নীতিনির্ধারক, রাজনীতিবিদ মন্ত্রীসহ বিভিন্ন জায়গা লবিং তদবির করছেন।
এ বিষয়ে জবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নূরে আলম আব্দুল্লাহ্ বলেন, বর্তমান উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক কিছু চিনে ফেলেছেন। সরকার তাকে যদি তৃতীয় মেয়াদে দায়িত্ব না দেয় তাহলে জবির শিক্ষকদের মধ্যে থেকেই যেন উপাচার্যের দায়িত্ব দেয়া হয়। ১৫ বছর বয়স এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক সিনিয়র শিক্ষক ও যোগ্য শিক্ষক রয়েছেন উপাচার্য হিসাবে দায়িত্ব নেয়ার।
নীল দলের একাংশের সভাপতি অধ্যাপক জাকারিয়া মিয়া বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সাথে আমারও দাবি থাকবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যেন উপাচার্য নিয়োগ দেয়া হয়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষকদের মধ্যে থেকে অনেকে উপাচার্য হওয়ার মত যোগ্য রয়েছেন। সরকার যোগ্যদের থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ দিবেন।
নীল দলের আরেকাংশের সভাপতি অধ্যাপক ড. কাজী সাইফুদ্দিন বলেন, সরকার যাকে ইচ্ছে তাকেই উপাচার্য হিসাবে নিয়োগ দিবেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক যোগ্য শিক্ষক রয়েছেন। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্য থেকে উপাচার্য নিয়োগ দিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিক উন্নয়ন হবে।
জবি ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি তরিকুল ইসলাম বলেন, ১৫ বছরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় অনেক পথ এগিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে শতাধিক অধ্যাপক আছেন যাদের মধ্য থেকে অনেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য হওয়ার মত যোগ্যতা রাখেন। তাদের মধ্য থেকেই জবির উপাচার্য নিয়োগ দেয়া হউক। বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্য থেকে নিয়োগ দেয়া হলে তিনি শিক্ষক, শিক্ষার্থী সবার সুখ দুখ বেদনা সমস্যা বুঝতে পারবেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে কাজ করেন।
জবি ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি কে এম মোত্তাকি বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক দক্ষ প্রশসক ও শিক্ষার্থী বান্ধব শিক্ষক রয়েছেন। তারাও উপাচার্য হওয়ার যোগ্যতা রাখেন। সরকারের উচিৎ হবে শিক্ষার্থীবান্ধব ও যোগ্য একজনকে উপাচার্য হিসাবে নিয়োগ দেয়া।
ছাত্র অধিকার পরিষদের জবি শাখার সভাপতি রায়সুল ইসলাম নয়ন বলেন, আমরা আর ভাড়াটে উপাচার্য চাই না। বর্তমান উপাচার্য ড. মীজানুর রহমানের সময় আন্দোলনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সব অধিকার আদায় করে নিতে হয়েছে। আমরা এ উপাচার্যকে আর চাই না। আমরা জগন্নাথ থেকেই উপাচার্য চাই। কারন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের সুযোগ সুবিধা সমস্যা সম্পর্কে অবগত। তারাই শিক্ষার্থীদের সমস্যা ভাল বুঝবে।
Array