
বাথরুম ব্যবহারে অনেকেরই কিছু বদঅভ্যাস আছে যা করা একদম উচিত নয়। অনেকে এই কাজগুলো অভ্যাসবশত করে আবার অনেকে অজ্ঞতাবশত করে থাকে। এই অভ্যাসগুলোর কারণে আপনি আক্রান্ত হতে পারেন ভয়ংকর কোন রোগে। আপাতদৃষ্টিতে বাথরুমকে পরিষ্কার মনে হলেও এর ভিতর কিছু জীবাণু থেকে যায়। আমাদের কিছু কাজে এই জীবাণুগুলো আমাদের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে, রোগ ব্যাধি সৃষ্টি করে থাকে।
১. বাথরুমে মোবাইল ফোনের ব্যবহার: মার্কেটিং এজেন্সি ১১মার্ক এক জরিপে দেখেছে যে, শতকরা ৭৫ আমেরিকান বাথরুমে মোবাইল ফোন ব্যবহার করে থাকেন। এমনকি ৩০% পুরুষ এবং ২০% মহিলা মোবাইল ছাড়া বাথরুমে প্রবেশ করেন না! আপনি যখন আপনার ফোন বাথরুমের বেসিন বা ওয়াশ কাউন্টারে রাখেন তখন আপনার অজান্তে কিছু শক্তিশালী ব্যাকটেরিয়া আপনার ফোনে চলে যায়। আর এই ব্যাকটেরিয়ার কারণে আপনার হতে পারে নানা রোগ ব্যাধি। হাত ভাল করে ধুলেও ফোনের দিকে নজর দেই না। যদি কখনও ফোন বাথরুমে নিয়ে গেলেও ডিসইনফেকটিভ লোশন দিয়ে ফোন পরিষ্কার করে নিবেন।
২. ফ্লাশ করার সময় কমোডে ঢাকা না দেওয়া: এই কাজটি আমরা প্রায় সবাই করে থাকি। যখন আমরা কমোডে ফ্ল্যাশ করি তখন ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র দানা বাতাসে মিশে যায়। আর এই ক্ষুদ দানার সাথে মিশে থাকে নানা ব্যাকটেরিয়া। টয়েলেট সিট থেকে প্রায় ৬ ফুট উঁচু উচ্চতায় পৌঁছতে পারে এই সব জলকণা। এবং এইগুলো দীর্ঘসময় পর্যন্ত স্থায়ী হয়। তাই কমোড ফ্ল্যাশ করার সময়ে ঢাকনা লাগিয়ে রাখা উচিত।
৩. টুথব্রাশ রাখা: টুথব্রাশ সাধারণত সবাই বাথরুমে রাখে। দাঁত মাজার পর বাথরুমে টুথব্রাশ রেখে দিলে তা সহজে শুকনো হতে চায় না। আর এই ভেজা ভেজা পরিবেশেই সংক্রমণ জাতীয় ব্যাকটেরিয়া বেশি জন্ম নেয়। পরে ব্রাশ থেকে এই ব্যাকটেরিয়াগুলো মুখে প্রবেশ করে ফেলে। তাই বাথরুমে টুথব্রাশ না রেখে বাইরে কোন স্থানে টুথব্রাশ রাখা ভাল।
৪. মেকআপ সামগ্রী বাথরুমে রাখা: মেকআপ সামগ্রী বাথরুমে রাখা বা নিয়ে যাওয়া উচিত নয়। তা যত ছোট মেকআপ সামগ্রী হোক না কেন। কারণ মূলত বেসিনের কাউন্টারে আপনি মেকআপ সামগ্রী রেখে থাকেন। ফলে সেখানকার ব্যাকটেরিয়া আপনার মেকআপ সামগ্রীতে চলে যায়। এরপর আপনি যখন তা ত্বকে ব্যবহার করেন, তখন ত্বকের রোমকূপ দিয়ে এই ব্যাকটেরিয়াগুলো শরীরের মধ্যে ঢুকে আপনাকে অসুস্থ করে দেয়।
৫. লুফা ব্যবহার: লুফা বা গা পরিষ্কার করার ছোবা ব্যবহার করা হয় প্রায় সব বাড়িতে। কিন্তু লুফা ব্যবহার করার পর তা বাথরুমে রাখা উচিত নয়। ভেজা লুফায় প্রচুর পরিমাণে ব্যাকটেরিয়া জন্ম গ্রহণ করে। তাই ব্যবহারের পর রোদে শুকিয়ে তারপর আবার বাথরুমে রাখুন। এতে লুফায় থাকা জীবাণু গুলো ধ্বংস হয়ে যায়।
৬. তোয়ালে রাখা: বাথরুমের কমোড, মেঝে পরিষ্কার করা হলেও দেওয়াল পরিষ্কার করা হয় না। দেওয়ালে থাকা অসংখ্য জীবাণু, ব্যাকটেরিয়া বাথরুমে টাঙ্গিয়ে রাখা তোয়ালেতে চলে আসে। যখন আমরা তোয়ালে ব্যবহার করি, তখন তা আমাদের শরীরে চলে আসে। তাই বাথরুমে তোয়ালে না রাখাই নিরাপদ।
ব্যবহৃত টিস্যু টয়লেটে ফেলা : বেশিরভাগ টিস্যু ‘ফ্ল্যাশযোগ্য’ হিসেবে দাবী করা হলেও আসলে তা নয়। কনজ্যুমার রিপোর্টের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, টয়লেট টিস্যু ব্যতীত অনেক সাধারণ টিস্যু ১০ মিনিটেও পানির সঙ্গে মিশে যায়না বরং টয়লেটের ভেতরে আটকে থাকে আপনার অজান্তেই। শুধুমাত্র এই টিস্যুর কারণে বড় বড় ড্রেন এবং নর্দমা আটকে যায়। আরো যেসকল টয়লেট্রিজ পণ্য কখনোই ফ্ল্যাশ করবেন না সেগুলো হল- স্যানিটারি ন্যাপকিন, ট্যাম্পন, কনডম, ব্যান্ডেজ এবং দাঁতের ফ্লসিং।
শ্যাম্পু করার সময় চুল মাথার উপরে নিয়ে আসা : যাদের চুল অনেক লম্বা, তারা শ্যাম্পু করার সময় চুল মাথার উপরে নিয়ে এসে স্তূপ করে থাকেন। আসলে শ্যাম্পু করার সময় এসব কিছু না করে আপনার চুল যে পজিশনে আছে ঠিক তেমনিভাবে চুল পরিষ্কার করুন; এটা বেশি ফলপ্রদ। আপনার চুল স্বাভাবিক হোক অথবা কোঁকড়ানো; আপনার চুলকে তার আকৃতিতে রেখে শ্যাম্পু করুন। এতে আপনার চুল নরম থাকবে এবং জটও কম লাগবে।
কটন বাড দিয়ে কান পরিষ্কার করা : কানের খইল হয়তো আপনার কাছে নোংরা জিনিস বলে মনে হতে পারে। কিন্তু এটি আপনার কানের পর্দার একমাত্র প্রাকৃতিক সুরক্ষা ব্যবস্থা। কোনো খাদ্য চিবানো এবং কথা বলার সময় কানের খইল কানের ভেতর থেকে বাইরের দিকে চলে আসে এবং তখনই আপনি কটন বাড দিয়ে তা পরিষ্কার করে ফেলেন। ফলে আপনার শরীর তার প্রয়োজনীয় সুরক্ষা ব্যবস্থা থেকে বঞ্চিত হয়। তাছাড়া কটন বাড দিয়ে কান পরিষ্কার করার সময় এই খইল অনেকসময় কানের ভেতরের অংশে আটকে যায়। এজন্য অতিরিক্ত কান খোঁচানোর অভ্যাস পরিত্যাগ করুন।
টয়লেটে বেশি সময় বসে থাকা : অনেকেই আছেন যারা টয়লেটে বসে বই পড়েন অথবা মোবাইল নাড়াচাড়া করতে পছন্দ করেন। কিছু মানুষের নিকট এটা আনন্দদায়ক বা মজার হলেও এখানে বড় ধরনের একটি স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে যায়। কারণ সিরামিকের কমোডে বেশিক্ষণ বসে থাকার কারণে অর্শরোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এভাবে বসে থাকার ফলে আপনার মলদ্বারের ওপর ব্যাপক চাপের সৃষ্টি হয় যার ফলে অর্শরোগের সৃষ্টি হয়। অর্শরোগের সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ হচ্ছে, পায়ুপথে রক্তপাত হওয়া। কিন্তু আপনার কাছে এটা অনেকটা চুলকানি বা হালকা ব্যথার মতো মনে হতে পারে। অবশ্য অর্শের সমস্যা সাধারণত এক সপ্তাহের মধ্যে নিরাময় হয়ে যায়। তবে মনে রাখবেন টয়লেট কখনোই অবসর সময় কাটাবার জায়গা হিসেবে ধরে নেবেন না।
গোসলের তোয়ালে মুখমন্ডল পরিষ্কারের কাজে ব্যবহার করা : অন্যান্য অনেক জিনিসের মতো গোসলের তোয়ালে হচ্ছে, বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়ার আবাসস্থল। ব্যাকটেরিয়া থেকে নিরাপদ থাকার একমাত্র উপায় হচ্ছে, প্রতিবার মুখ মোছার সময় একটি পরিষ্কার তোয়ালে ব্যবহার করা। প্রতিদিনের প্রয়োজন অনুযায়ী পরিষ্কার তোয়ালে যদি ব্যবহার না করতে পারেন, আপনার হাত দিয়ে মুখমন্ডল পরিস্কার করুন। তবে কয়েকদিন পরপর তোয়ালে পরিষ্কার করুন অথবা নতুন পরিষ্কার তোয়ালে ব্যবহার করুন। উল্লেখ্য, ভেজা তোয়ালেতে প্রচুর পরিমাণে ব্যাকটেরিয়া বসবাস করে।
সাবানের উপরিভাগ পরিষ্কার করে না নেওয়া : যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংস্থার তথ্যমতে, রোগ সৃষ্টিকারী অনেক অণুজীব সাবান ব্যবহারের পর সাবানের উপরিভাগে থেকে যায়। তবে এক গবেষণায় দেখা গেছে, এসব ব্যাকটেরিয়া সাবান থেকে আপনার হাতে পৌঁছতে পারেনা। তারপরও নিরাপদ থাকার জন্য প্রতিবার সাবান ব্যবহারের আগে পানিতে সাবান ধুয়ে নিন এবং ব্যবহারের পর সাবান কোনো শুষ্ক স্থানে রাখুন। কেননা আর্দ্র বা ভেজা পরিবেশ ব্যাকটেরিয়া তৈরির উপযুক্ত একটি পরিবেশ।
সাধারণ তাপমাত্রায় বাথরুম পরিষ্কার করা : বাথরুম সম্পর্কিত স্বাস্থ্যগবেষক জেনী বোটেরো বলেন, গোসলের চৌবাচ্চা, বেসিন এবং টাইলস সাধারণ তাপমাত্রার তুলনায় ১০ ডিগ্রি বাড়িয়ে নিলে পরিষ্কারক উপাদানগুলোর কার্যক্ষমতা দ্বিগুণ হয়ে যায়। ভালো ফলাফল পাওয়ার জন্য চৌবাচ্চা এবং বেসিন গরম পানি দিয়ে পূর্ণ করে নিন। কিছুক্ষণ এভাবে রাখার পর সেগুলো পরিষ্কার করার কাজ শুরু করুন।
টয়লেটের কাছাকাছি টুথব্রাশ রাখা : টুথব্রাশ সাধারণত টয়লেট থেকে ৪ ফুট বা তারও বেশি দূরে রাখা উচিত। কেননা টয়লেটে থাকা মলমূত্রের নির্যাস ফ্ল্যাশ করার সময় (যদি কমোডের ঢাকনা খোলা থাকে) ছড়িয়ে গিয়ে আপনার টুথব্রাশে পরতে পারে। তাছাড়া আরেকটি জায়গা হচ্ছে বেসিন, যেখান থেকে সাবান এবং ময়লা পানির নির্যাস আপনার টুথব্রাশে জমা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আমেরিকান ডেন্টাল অ্যাসোসিয়েশন টুথব্রাশ আলাদা করে বাথরুমের উপরের দিকের কোনো শুষ্ক স্থানে রাখার পরামর্শ দিয়ে থাকে। যাতে ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ এবং অন্য টুথব্রাশের সঙ্গে আপনার টুথব্রাশ মিশে যাওয়া থেকে আপনি নিরাপদ থাকতে পারেন।
গরম পানি দিয়ে হাত ধোয়া : ব্যাকটেরিয়া থেকে নিরাপদ থাকার জন্য আপনার গরম পানি দিয়ে হাত ধোয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। কেননা গবেষণায় দেখা গেছে, গরম পানি এবং ঠান্ডা পানি এক্ষেত্রে একই কাজ করে থাকে। ভ্যান্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় বলা হয়েছে, গরম পানি এবং ঠান্ডা পানি ব্যাকটেরিয়া হ্রাসের ক্ষেত্রে সমান কাজ করে। গবেষকরা এটাও বলেন যে, ব্যাকটেরিয়ার হাত থেকে রেহাই পেতে হলে ২১২ ডিগ্রী তাপমাত্রার ফুটন্ত গরম পানিতে আপনাকে হাত ধুতে হবে যা কখনোই সম্ভব নয়। তাছাড়া গরম পানি আপনার হাতের ত্বককে শুষ্ক করে দেয়। সুতরাং গরম পানিতে হাত ধোয়া থেকে বিরত থাকুন।
মলত্যাগের সময় খুব জোরে কোঁথ দেওয়া : কোষ্ঠ্যকাঠিন্যের সমস্যার কারণে মলত্যাগের সময় জোরে কোঁথ দিলে অর্শরোগ হওয়ার শতভাগ সম্ভাবনা থাকে। আপনি যত জোরে কোঁথ দেবেন, আপনার মলদ্বারের শিরা-উপশিরার উপর ঠিক ততটা চাপ সৃষ্টি হবে। এর ফলে মলদ্বারের বিভিন্ন স্থানে ফাটলের সৃষ্টি হতে পারে। তাই মলদ্বারে বেশি চাপ সৃষ্টি না করে স্বাভাবিকভাবে মল বের হয়ে যেতে দিন। কেননা স্বাভাবিকভাবে মলত্যাগের করলে আপনার মলদ্বার কম পরিশ্রমে মলত্যাগের উপযোগী হয়ে ওঠে। এভাবে যদি কাজ না হয়, প্রয়োজনে জোলাপ সেবন করুন।
হাত ভালো করে পরিষ্কার না করা: আপনার হাত যথাযথ পরিষ্কার করার জন্য সাবান এবং পানি দিয়ে মাত্র ২০ সেকেন্ড ধোয়া প্রয়োজন। মিশিগান স্টেট বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, ৯৫ শতাংশ মানুষ সামান্য এই সময়টুকু নিয়ে তাদের হাত ভালোভাবে পরিষ্কার করেন না। গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে গড়ে সবাই ৬ সেকেন্ড সময় নিয়ে হাত পরিষ্কার করেন। সময় ঠিক রেখে হাত পরিষ্কার করার জন্য আপনি মনে মনে কোনো গান গাইতে গাইতে হাত পরিষ্কার করতে পারেন। এতে করে আপনার হাত রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণু থেকে নিরাপদে থাকবে।
টুথব্রাশ পরিষ্কার করতে ভুলে যাওয়া: ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে, টুথব্রাশে ই-কোলাই সহ প্রায় ১০ মিলিয়ন বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া থাকে। এই ধরনের ক্ষতিকর সব ব্যাকটেরিয়া কেউই নিজের মুখের ভেতর নিতে চাইবে না। সুতরাং প্রতিবার ব্যবহারের পর আপনার টুথব্রাশ ভালোভাবে পরিষ্কার করুন এবং মাঝেমধ্যে টুথব্রাশ এককাপ ভিনেগারের মধ্যে ৩০ মিনিটের জন্য ভিজিয়ে রাখুন। এভাবে আপনার টুথব্রাশ থেকে সকল ব্যাকটেরিয়া দূর হয়ে যাবে।
মলত্যাগের পর বেশি টিস্যু ব্যবহার করা: মলত্যাগের পর সাধারণত টিস্যু দিয়ে বেশি মোছামুছি না করাটাই ভালো। মলত্যাগের পর ১-২ বার টিস্যু ব্যবহার করে পরিষ্কার করে ফেলুন। মলদ্বার অতিরিক্ত মোছামুছি করলে আপনার মলদ্বারে ছোট ছোট ক্ষত সৃষ্টি হতে পারে, ফলে সেখানে প্রদাহ এবং চুলকানি সৃষ্টি হতে পারে। একবার টিস্যু ব্যবহার যদি আপনার কাছে যথেষ্ট মনে না হয় তাহলে মলদ্বার মোছার কাজে ভেজা টিস্যু ব্যবহার করতে পারেন।
গোসলের সময় শরীর বেশি ঘষাঘষি করা: গোসলের সময় তোয়ালে বা ফোম দিয়ে ত্বক বেশি ঘষাঘষি করার ফলে আপনার ত্বকের প্রাকৃতিক সুরক্ষাব্যবস্থা নষ্ট হয়ে যায়। এভাবে ত্বক পরিষ্কার না করে বাচ্চাদের ব্যবহার্য তোয়ালে দিয়ে যতটা হালকা করে সম্ভব ত্বক পরিষ্কার করুন। তাছাড়া আপনার শরীরের ত্বক পরিষ্কার করার জন্য আপনার হাতই যথেষ্ট। তবে শরীরের ত্বক পরিষ্কার করার জন্য যে তোয়ালে বা ফোম আপনি ব্যবহার করেন সেটা একটা নির্দিষ্ট সময় পর পাল্টে ফেলুন যাতে আপনি ব্যাকটেরিয়ার হাত থেকে সুরক্ষিত থাকেন।
টয়লেটের পেছনে পরিষ্কার না করা: এটা অবশ্য চিন্তা করতেও বিদঘুটে লাগে যে, মল এবং মূত্রের বেশ কিছুটা অংশ আপনার টয়লেটের পেছনের অংশে জায়গা করে নেয় এবং খুব নোংরা একটি আস্তরণ তৈরি করে যা পরিষ্কার করা খুবই কঠিন একটি কাজ। কিছু পেপার টাওয়েল নিয়ে তা জীবাণুনাশক কোনো পরিষ্কারক দিয়ে ভিজিয়ে নিন। অতঃপর সেগুলো দিয়ে আপনার টয়লেটের পিছনের অংশ পরিষ্কার করুন। এরপর আবার শুষ্ক পেপার টাওয়েল দিয়ে পরিষ্কার করুন।
মাথার ত্বকে কন্ডিশনার না লাগানো: বেশিরভাগ মানুষ তাদের চুলে কন্ডিশনার লাগান কিন্তু মাথার ত্বক বা স্ক্যাল্পের কথা তারা ভুলেই যান। চুলে কন্ডিশনার লাগানোর সময় মাথার ত্বক এবং চুল উভয় স্থানে লাগানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা কন্ডিশনার আপনার মাথার ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে ফলে চুলে খুশকি হয়না এবং চুল রুক্ষ হয়ে যায়না।
সাবানে ময়েশ্চারাইজার না থাকা: আপনার সাবানে কোনো ময়েশ্চারাইজিং এজেন্ট অর্থাৎ আর্দ্রতা তৈরিকারী কেমিক্যাল না থাকলে ওই সাবান ব্যবহারের ফলে আপনার ত্বক শুষ্ক এবং রুক্ষ হয়ে যাবে। সাবান কেনার সময় মোড়কে সাবান তৈরির উপাদানগুলো খেয়াল করুন। সেখানে উপাদান হিসেবে ‘স্টিয়ারিক এসিড’ এবং ‘ময়েশ্চারাইজিং’ শব্দটির উল্লেখ আছে কিনা খেয়াল রাখবেন।
টয়লেট ব্রাশ ভেজা অবস্থায় রাখা: টয়লেট পরিষ্কার করার ব্রাশ ভেজা থাকলে সেখানে বিভিন্ন ধরনের টয়লেটের ব্যাকটেরিয়া বংশবৃদ্ধি শুরু করে এবং সেটিতে আর্দ্রতা ও ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ খুব দ্রুত বাড়তে থাকে। সেকারণে টয়লেট পরিষ্কার করার ব্রাশ ব্যবহারের পর তা হোল্ডারে না রেখে ভালোভাবে শুকিয়ে নিন। কেননা ভেজা অবস্থায় রেখে দিলে হিসাব অনুযায়ী আপনি ব্যাকটেরিয়া দিয়েই আপনার টয়লেট আবার পরিষ্কার করে বসবেন।
ভুল পদ্ধতিতে দাঁত ব্রাশ করা: দাঁত ব্রাশ করার সবচেয়ে ভালো পন্থা হচ্ছে, উপরের এবং নিচের দাঁতের সঙ্গে টুথব্রাশ ৪৫ ডিগ্রি কোণ করে ব্রাশ করা। কেননা দাঁতের মাড়ির নিচের অংশে বেশিরভাগ সময় প্লাকের আস্তরণ পড়ে থাকে যা সহজে পরিষ্কার হয়না। তাছাড়া ব্রাশ করার সময় অল্প করে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ব্রাশ করুন। তবে বৈদ্যুতিক টুথব্রাশ ব্যবহার করলে টুথব্রাশ ঘোরানোর কোনো প্রয়োজন নেই। কেননা বৈদ্যুতিক টুথব্রাশে এই ব্যবস্থা আগে থেকেই দেওয়া থাকে।
শরীর ভালোভাবে না ধোয়া: গোসল শেষ করে বাথরুম থেকে বের হওয়ার আগে আপনার শরীরে থাকা সাবান এবং শ্যাম্পু ভালমতো পরিষ্কার করুন। কেননা আপনার ত্বকে সাবান এবং শ্যাম্পুর নির্যাস জমে থাকলে ত্বকে প্রদাহ তৈরি হতে পারে। তাছাড়া ত্বকের ছিদ্র বন্ধ হয়ে ব্রণ তৈরি হতে পারে। আপনার পিঠে যদি ব্রণ তৈরি হওয়ার সমস্যা থেকে থাকে, চুল পরিষ্কার করার সময় মাথা একদিকে কাঁত করে পরিষ্কার করুন যাতে সেগুলোর নির্যাস আপনার পিঠে না লাগে।
জোরে ঘষে শরীর মোছা: শরীরের পানি মোছার জন্য তোয়ালে দিয়ে জোরে ঘষার ফলে কিছু লিপিড, আমিষ এবং ফ্যাটি এসিড আপনার শরীর থেকে চলে যায়। সেজন্য তোয়ালে দিয়ে খুব জোরে ঘষাঘষি করা পরিহার করুন।
Array