ভারতের বহুল সমালোচিত ও বিতর্কিত ‘নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল’ অবশেষে দেশটির কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পেয়েছে। বুধবার দেশটির মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত এই আইন বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে ভারতে যাওয়া অমুসলিমদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দিতে চায়। তবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাড়ি জমানো মুসলিম শরণার্থীদের ব্যাপারে এই বিলে কিছুই বলা হয়নি।
নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল-২০১৬ গত লোকসভায় পাস করাতে ব্যর্থ হয় দেশটির ক্ষমতাসীন সরকার। পরে সংসদের একটি যৌথ কমিটি দ্বারা বিলটির তদন্ত হয়েছিল। এনডিটিভি বলছে, দেশটির মন্ত্রিসভায় বিলটি অনুমোদন পাওয়ায় আগামী সপ্তাহে তা সংসদে উঠতে পারে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
বিলটি সংসদের উচ্চকক্ষে পাস হলে বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে ভারতে পাড়ি জমানো হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি এবং খ্রিষ্টানরা ভারতীয় নাগরিকত্বের পথ প্রশস্ত হবে। সংসদে এই আইন পাস হলে এসব শরণার্থীদের নাগরিকত্ব প্রদানের জন্য দেশটির ১৯৯৫ সালের নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করা হবে।
একদিন আগে ঝাড়খণ্ডে নির্বাচনী এক প্রচারে অংশ নিয়ে দেশটির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে জাতীয় নাগরিক পঞ্জিকা (এনআরসি) বাস্তবায়ন করে সব অনুপ্রবেশকারীকে ভারত থেকে তাড়িয়ে দেয়া হবে।প্রথমবারের মতো অনুপ্রবেশকারীদের দেশ থেকে তাড়িয়ে দেয়ার সময়সীমা উল্লেখ করে অমিত শাহ বলেন, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগেই সারা দেশেই জাতীয় নাগরিক পঞ্জিকার বাস্তবায়ন হবে।
আসামে বিতর্কিত জাতীয় নাগরিক পঞ্জিকা বাস্তবায়ন করে ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার সেখানকার ১৯ লাখ মানুষকে নাগরিকত্ব তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে। এই বাদ পড়াদের অধিকাংশ বাংলা ভাষাভাষি মুসলিম এবং অনেকেই বাংলাদেশি। তবে অন্য ধর্মেরও অনেক অনুসারী এই তালিকায় ঠাঁই পাননি।
আসামের এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে অ-মুসলিমদের মধ্যে দেশ ছাড়া হওয়ার আশঙ্কা দূর করতে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলটি আগে পাশ করাতে চায় বিজেপি সরকার। এই বিলে বলা হয়েছে, আফগানিস্তান পাকিস্তান, বাংলাদেশ থেকে যে অ-মুসলিমেরা (হিন্দু, পার্সি, শিখ, খ্রিষ্টান) ধর্মীয় নিপীড়নের কারণে ভারতে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন, তাদের নাগরিকত্ব দেবে সরকার।তবে বিলে প্রতিবেশী বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাড়ি জমানো মুসলিমদের ব্যাপারে কোনও কিছুই উল্লেখ করা হয়নি।
Array