
আফ্রিকার দেশ মালিতে সেনা অভ্যুত্থানের পর পদত্যাগ করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম বোবাকার কেইতা। একই সঙ্গে তিনি সংসদ ভেঙে দেয়ারও ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমি ক্ষমতায় টিকে থাকতে রক্তপাত চাই না’।
বুধবার সকালে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত এক ভাষণে কেইতা এমন ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনীর একটি নির্দিষ্ট অংশ যদি নিজেদের হস্তক্ষেপের মাধ্যমে সরকারের ইতি ঘটাতে চায়, আমার সামনে কি পদত্যাগ ছাড়া আর কোনও বিকল্প আছে?’
ওই ভাষণের আগে প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম বোউবাকার কেইতা এবং প্রধানমন্ত্রী বোউবোউ সিসেকে আটক করার ঘোষণাও দেয়া হয়। বিদ্রোহী সেনারা তাদের আটকের পর রাজধানী বামাকোর একটি সামরিক ক্যাম্পে নিয়ে গেছেন বলেও খবরে বলা হয়।
এর আগেরদিন মঙ্গলবার সকালে দেশটির রাজধানী বামাকোতে দেশটির সেনাবাহিনীর সদর দফতরে গুলি ছুঁড়ে অভ্যুত্থানের ঘোষণা দেয় জুনিয়র কিছু কর্মকর্তা। তাদের সঙ্গে যুক্ত হন আরো সেনা। অভ্যুত্থান শুরুর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বিদ্রোহী জুনিয়ররা ঊর্ধ্বতন বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকেও আটক করেন।
মালির এই সেনা অভ্যুত্থানের নিন্দা জানিয়েছে ওই অঞ্চলের অন্যান্য দেশ এবং দেশটির সাবেক ঔপনিবেশিক শাসক ফ্রান্স।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, দেশটির বিভিন্ন স্থানে টহল দিচ্ছে সেনারা, মাঝে মাঝেই গুলি ছোঁড়া হচ্ছে।
মালির সেনাদের মধ্যে বেতন-ভাতা নিয়ে অসন্তোষ এবং জিহাদিদের সঙ্গে অব্যাহত লড়াই নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে। সেই সঙ্গে সদ্য ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্টের ওপরও অনেকে সন্তুষ্ট নয়।
২০১৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দ্বিতীয় বারের মতো বিজয়ী হন কেইতা। কিন্তু দুর্নীতি, অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা ও সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বেড়ে যাওয়ায় তার ওপর অনেকের ক্ষোভ তৈরি হয়।
সাম্প্রতিক সময়ে দেশটিতে বেশ কয়েকবার বড় ধরনের বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে। দেশটির রক্ষণশীল মুসলিম ইমাম মাহমুদ ডিকোর নেতৃত্বাধীন নতুন একটি জোট দেশে সংস্কারের দাবি তুলেছে। কেইতা তাকে যৌথ সরকার গঠনসহ নানা প্রস্তাব দিলেও মাহমুদ ডিকো তা প্রত্যাখ্যান করেছেন।
Array