• ঢাকা, বাংলাদেশ

রিজার্ভের স্বর্ণ যায় কোথায় 

 admin 
02nd Jun 2021 9:54 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

মূল্যবান ধাতু স্বর্ণ শুধু নারীর অলংকার হিসেবেই ব্যবহূত হয় না; লেনদেনের মাধ্যম হিসেবেও তা ব্যবহূত হয়। একইসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টকে সমৃদ্ধ করে এই ধাতু। এর মাঝেই প্রশ্ন জাগে ব্যাংকের ভল্টে স্বর্ণ কোথা থেকে আসে আবার কোথায় যায়?

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ফরেন এক্সচেঞ্জ পলিসি বিভাগ জানায়, শুধু চোরাচালানে জব্দ স্বর্ণই দেশের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ ভল্টে জায়গা করে নেয়; যা নানা সময়ে স্বর্ণ বিক্রি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিজেও স্বর্ণ কেনে। জানা যায়, কাস্টমস বা অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা নানা সময়ে চোরাচালান বা চুরি-ডাকাতির স্বর্ণ আটক করে। সেগুলো আদালতের নির্দেশক্রমে সংরক্ষণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। আদালতের নির্দেশে মামলার আলামত হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে অস্থায়ীভাবে সংরক্ষণ করা হয় স্বর্ণ। মামলা নিষ্পত্তি শেষে আদালতের আদেশে নির্ধারণ হয় সেটার ভাগ্য। উদ্ধার করা স্বর্ণ মামলার রায় দাবিদারের পক্ষে গেলে তা পাওনাদারকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। আর যদি দাবিদার খুঁজে না পাওয়া যায়, সেটি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হয়। তখন সেটি বিক্রি করে তার অর্থ নিয়ে নেয় সরকার।

তবে, রাষ্ট্রের অনুকূলে যেসব স্বর্ণ আসে, আর তা যদি বার আকারে থাকে, তবে সেই স্বর্ণ কিনে নিতে পারে শুধুমাত্র বাংলাদেশ ব্যাংক। এ ক্ষেত্রে খাঁটি স্বর্ণ হতে হবে। ক্রয়কৃত অর্থ সরকারকে দিয়ে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আর আদালতে নিষ্পত্তি হয় না যে স্বর্ণ, সেগুলো অস্থায়ীভাবে জমা থাকে।

ভল্টে স্বর্ণ রাখার কাজটি করলেও এর থেকে কোনো লাভ পায় না বাংলাদেশ ব্যাংক। স্থায়ী খাতে নেওয়ার আগ পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে স্বর্ণ পরীক্ষা করা, ওজন করা এবং এর হিসাব নিয়মিত লেজারে সংরক্ষণ করার দায়িত্ব পালন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ কাজে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের খরচ ছাড়া কোনো লাভ নেই।

মামলা নিষ্পত্তি শেষে ওই স্বর্ণের আর্থিক মূল্য কাস্টমসের হাতে তুলে দেওয়া হয়, যা তাদের কমিশন আয় খাতে দেখানো হয়। পরবর্তী সময় সেটা কাস্টমসের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে জমা হয়। এই বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ মামলার আলামত হিসেবে বছরের পর বছর ভল্টেই পড়ে থাকছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সব সময় স্বর্ণ বিক্রি করে না। তবে যখন বিক্রি করা হয় অলংকার ব্যবসায়ীরা তখনই তা লুফে নেন। সর্বশেষ ২০০৮ সালে নিলামের (অকশন) মাধ্যমে ২০ কেজির বেশি স্বর্ণ বিক্রি হয়। এরপর ১৩ বছর কেটে গেলেও আর বিক্রি করা হয়নি। বিক্রির ক্ষেত্রে ক্রেতাকে বাজারমূল্য দিতে হয়। পাশাপাশি মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা অন্যান্য রাজস্ব পরিশোধ করতে হয়।

বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে স্থায়ী ও অস্থায়ী খাত মিলে স্বর্ণের মজুত আছে প্রায় ৩ হাজার কেজি। এর মধ্যে অস্থায়ী খাতে ২ হাজার ৮৫০ কেজি ও স্থায়ী খাতে স্বর্ণের পরিমাণ ১৫০ কেজি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, দ্রুত সময়ের মধ্যে ভল্টে রাখা স্বর্ণের একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ বিক্রি করা হবে। এ জন্য প্রক্রিয়াগত দিকগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।

স্বর্ণের স্বল্প মজুত হলে বাংলাদেশ ব্যাংক বিক্রির উদ্যোগ নেয় না। একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ মজুতের চেয়ে বেশি হলে অতিরিক্ত স্বর্ণ বিক্রির উদ্যোগ নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর আগে এত দীর্ঘ সময় স্বর্ণ বিক্রি বন্ধ ছিল না

বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির সহসভাপতি দেওয়ান আমিরুল ইসলাম জানান, একটা সময়ে স্থানীয় উদ্যোক্তাদের প্রধান উৎস ছিল বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টের স্বর্ণ। এখন কালেভাদ্রে এই স্বর্ণ বিক্রি করা হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আটক করা স্বর্ণ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আসার পর সঙ্গে সঙ্গে তা ভল্টে জমা হয়। এরপর মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সেগুলো ভল্টেই থাকে। মামলা নিষ্পত্তির পর সরকারি এজেন্সির মাধ্যমে এটা নিলাম করে বিক্রি করা টাকা সরকারের কোষাগারে জমা হয়। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক যদি চায়, তাহলে তা আন্তর্জাতিক বাজারদরে কিনে নিতে পারে। কেনার পর সেই স্বর্ণ তখন রিজার্ভে জমা হয়।’ তিনি বলেন, কয়েক বছর আগে বাইরে থেকে কিছু স্বর্ণ কেন্দ্রীয় ব্যাংক কিনেছিল। দাম বাড়ার পরে কিছু বিক্রিও করেছে। তবে বর্তমানে স্বর্ণ কেনার প্রয়োজন নেই।

Array
We use all content from others website just for demo purpose. We suggest to remove all content after building your demo website. And Dont copy our content without our permission.
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
এই বিভাগের আরও খবর
 
Jugantor Logo
ফজর ৫:০৫
জোহর ১১:৪৬
আসর ৪:০৮
মাগরিব ৫:১১
ইশা ৬:২৬
সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১