• ঢাকা, বাংলাদেশ

এবার যমুনার তলদেশে টানেল 

 admin 
24th Jan 2019 10:21 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

কর্নফুলীর পর এবার যমুনা নদীর নিচ দিয়ে তৈরি হতে যাচ্ছে দেশের দ্বিতীয় টানেল। এরই মধ্যে প্রস্তুতি এগিয়েছে অনেক দূর। সরকারের ধারাবাহিকতা থাকায় এই প্রস্তুতিতে আরও গতি এসেছে। টানেল নির্মাণের পূর্ণাঙ্গ সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য একটি প্রকল্প হাতে নিতে যাচ্ছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়।

‘যমুনা নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণে সম্ভাব্য সমীক্ষা পরিচালনা’- নামের প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ১২২ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। প্রস্তাবিত এ প্রকল্পটি নিয়ে বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হবে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) বৈঠক। অন্যদিকে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে প্রস্তাবিত পরামর্শক ব্যয় বেশি বলে মনে করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে ব্যয় প্রাক্কলনের ভিত্তি এবং যৌক্তিকতা সম্পর্কে প্রশ্ন তুলবে পরিকল্পনা কমিশন।

পরিকল্পনা সচিব মো. জিয়াউল ইসলাম সোমবার যুগান্তরকে বলেন, অনুমোদন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে একনেকে উপস্থাপনের আগে প্রি-একনেক বা পিইসি সভার আয়োজন করা হয়ে থাকে। পিইসি সভায় পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে প্রস্তাবটি যাচাই-বাছাই করবে।

পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক কর্মকর্তা যুগান্তরকে জানান, যমুনা নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণের লক্ষ্যে অর্থনৈতিক এবং কারিগরি সম্ভাব্যতার জন্য বিশদ আর্থিক ও প্রকৌশলগত কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা হবে। প্রক্রিয়াকরণ শেষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে প্রকল্পটি অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২০ সালের মার্চের মধ্যে তা বাস্তবায়ন করবে সেতু কর্তৃপক্ষ।

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, যমুনা বাংলাদেশের প্রধান নদীগুলোর মধ্যে একটি। এটি ভারত হতে সৃষ্টি হয়ে প্রথমে পদ্মা এবং পরে মেঘনা নদীর সঙ্গে মিলিত হয়েছে। এ নদীর প্রশস্ততা অনেক বেশি। বর্ষাকালে এর প্রস্থ প্রায় ৮-১৩ কিলোমিটার হয়। এ নদী দিয়ে গড়ে প্রতি সেকেন্ডে প্রায় সাড়ে ১৯ হাজার ঘনমিটার পানি প্রবাহিত হয় এবং প্রায় ৬০০ মিলিয়ন টন পলি বহন করে থাকে।

পলি পরিবহনের বিবেচনায় যমুনা বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম নদী এবং প্রবাহের হিসেবে এর অবস্থান পঞ্চম। পলি জমার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে যমুনা নদীতে সেতুর পরিবর্তে টানেল নির্মাণ সুবিধাজনক। টানেল নির্মাণের জন্য বালাশী-বাহাদুরাবাদ অবস্থানকে প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে সম্ভাব্যতা সমীক্ষার মাধ্যমে প্রস্তাবিত টানেলের প্রকৃত অবস্থান নিশ্চিত হওয়া যাবে।

সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সফরের সময় (২০১৪ সালের ২৫-২৮ মে) যমুনা নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণসহ বিভিন্ন অগ্রাধিকার প্রকল্পে ঋণ দেয়ার বিষয়ে জাপান সরকারের সঙ্গে যৌথ ইশতেহার স্বাক্ষরিত হয়। এ প্রকল্পটিতে অর্থায়নের জন্য ২০১৪ সালের ৭ আগস্ট প্রাথমিক প্রকল্প প্রস্তাব (পিডিপিপি) এবং সামাজিক ও পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন প্রতিবেদন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) মাধ্যমে ঢাকায় অবস্থিত জাপান দূতাবাসে পাঠানো হয়েছিল।

এ পরিপ্রেক্ষিতে প্রকল্পটি সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) মতামত দেয়। পরবর্তীতে এই সম্ভাব্যতা পরিচালনার জন্য বিশ্বব্যাংক, জাইকা এবং ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (আইডিবি) কাছে কারিগরি সহায়তা চাওয়া হয়। তবে এখন পর্যন্ত কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

এ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় দেশীয় অর্থায়নে সম্ভাব্যতা পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয়ার তাগিদ দেয়া হয়। ২০১৬ সালের ১৮ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এক ডিও লেটারে টানেলের মধ্যে রেলপথ রাখলে যদি অনেক বেশি ব্যয় বেড়ে যায়, সেক্ষেত্রে রেলপথ বাদ দিয়ে শুধু সড়ক পথ নির্মাণ করা যৌক্তিক হবে বলে মতামত দেয়া হয়।

সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরিচালনা করে ব্যয় বিবেচনার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানান তিনি। পরবর্তীতে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের আগে একটি প্রাথমিক সম্ভাবতা যাচাই করা হয়। এটির পর পূর্ণাঙ্গ সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রস্তাবিত প্রকল্পে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে কনসালটেন্ট বা পরামর্শক খাতে ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে ৯৪ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। কিন্তু পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের যুগ্ম প্রধান ড. সাঈদ হাসান সিকদার স্বাক্ষরিত পিইসি সভার জন্য তৈরি করা কার্যপত্রে বলা হয়েছে প্রস্তাবিত সমীক্ষা প্রকল্পটির আওতায় বিস্তারিত নকশা প্রণয়ন করা হবে না।

তাই প্রস্তাবিত বিদেশি ও দেশীয় পরামর্শকের সংখ্যা ও জনমাস বাস্তবতা বা প্রকৃত প্রয়োজনীয়তার নিরিখে পুনঃপর্যালোচনা বা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে যৌক্তিকভাবে কমানো প্রয়োজন। এছাড়া প্রস্তাবিত পরামর্শকের সংখ্যা ও জনমাস বার চার্ট আকারে যথাযথভাবে প্রকল্প দলিলে সংযোজন করা যেতে পারে। তাছাড়া প্রকল্পের আওতায় প্রস্তাবিত পরামর্শক সেবার ব্যয়সহ অন্যান্য ব্যয় প্রাক্কলনের ভিত্তির বিষয়ে সভায় আলোচনা করা প্রয়োজন।

প্রকল্পের আওতায় প্রধান কার্যক্রম হচ্ছে- প্রস্তাবিত টানেলের অবস্থান, অ্যালাইনমেন্ট ও দৈর্ঘ্য নির্ধারণ করা, প্রকল্পের বিভিন্ন উপ-অঙ্গের নির্মাণ পদ্ধতি নির্ধারণ, জিও টেকনিক্যাল ইনভেস্টিগেশন, সিসমিক স্টাডিও সার্ভে পরিচালনা, ট্রাফিক সার্ভে পরিচালনা, পরিবেশ ও পুনর্বাসন সংক্রান্ত সমীক্ষা পরিচালনা ও পরিকল্পনা প্রণয়ন, টানেলের প্রাথমিক নকশা প্রণয়ন ও এর ভিত্তিতে ব্যয় প্রাক্কলন, ভূমি অধিগ্রহণের পরিকল্পনা, অর্থনৈতিক ও আর্থিক বিশ্লেষণ, ক্রয়-পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ পরিকল্পনা তৈরি, ঝুঁকি মূল্যায়ন ও হ্রাসকরণের ব্যবস্থা চিহ্নিতকরণ।

Array
We use all content from others website just for demo purpose. We suggest to remove all content after building your demo website. And Dont copy our content without our permission.
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
এই বিভাগের আরও খবর
 
Jugantor Logo
ফজর ৫:০৫
জোহর ১১:৪৬
আসর ৪:০৮
মাগরিব ৫:১১
ইশা ৬:২৬
সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১