• ঢাকা, বাংলাদেশ

চালের বাজার মজুতদারদের কব্জায় 

 admin 
27th Aug 2022 9:34 am  |  অনলাইন সংস্করণ

নিউজ ডেস্ক:মজুতদারদের কব্জায় দেশের ধান-চালের বাজার। অবৈধ মজুতের মাধ্যমে তারা প্রতিনিয়ত দাম বাড়িয়ে চলেছে। বেপরোয়া ওসব মজুতদার বিদ্যমান বিধি-বিধানের তোয়াক্কা করছে না। সরকারি নিয়মানুযায়ী গুদামে ধান মজুত রাখা যাবে সর্বোচ্চ ৩০ দিন আর চাল ১৫ দিন। কিন্তু বাস্তবে তার বাস্তবায়ন নেই। বরং প্রভাবশালী ধান-চাল ব্যবসায়ীরা হাজার হাজার বস্তা ধান-চাল গুদামে মজুত করে রেখেছে। আর ধান-চালের অবৈধ মজুতদারদের কারণে চালের বাজারের দামের লাগাম টানা যাচ্ছে না। মজুতদারির কারণে বাজারে কমেছে ধানের সরবরাহ। ফলে ধানের দামও ঊর্ধ্বমুখী। স্বাভাবিক সরবরাহ না থাকায় ধানের বেশি দামে বাড়ছে চালের দামও। চাল ব্যবসায়ীদের সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, অতি লাভের আশায় বর্তমানে দেশে ধান মজুতদারদের পাশাপাশি বাজার নিয়ন্ত্রণকারী কিছু চালকল মালিকও অতিরিক্ত চাল মজুত করেছে। দাম বাড়াতে বাজারে ওই চাল ছাড়া হচ্ছে না। ফলে বাজারে চালের সংকট তৈরি হচ্ছে। যদিও খাদ্য বিভাগের দাবি, মজুতদারি রোধে অটো মিলগুলোর গুদাম পরিদর্শনসহ নিয়মিত অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে একেবারেই উল্টো চিত্র। দেশের উল্টরাঞ্চলের শত শত মিলে হাজার হাজার মণ ধান মজুত করে রাখা হয়েছে।
সূত্র জানায়, দেশের উত্তরাঞ্চলে বিপুলসংখ্যক চালকল রয়েছে। ওসব চালকলে সরকারি নিয়ম না মেনে অনেকেই দীর্ঘ সময় ধরে গুদামে ধান-চাল সংরক্ষণ করে রেখেছে। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলের বড় মিলগুলোর প্রায় প্রতিটিতেই হাজার হাজার মণ ধান-চালের মজুত রয়েছে। কিন্তু মিল মালিকরা মজুতদারির বদলে পরিবহন খরচকে চালের দাম বাড়ার জন্য বেশি দায়ি করছে। যদিও পরিবহন খরনের জন্য চালের এত দাম বৃদ্ধির কথা নয়। বরং পরিবহন খরচ বৃদ্ধির অজুহাত দেখিয়ে অসাধু সিন্ডিকেট প্রতি কেজি চালের দাম ধাপে ধাপে ৫ থেকে ১০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে চালের মোকামগুলোতে অতিরিক্ত দাম হাঁকা হচ্ছে। আর তার সঙ্গে অতিরিক্ত গাড়ি ভাড়া যোগ করে চালের দাম বেড়ে যাচ্ছে। এমনকি অনেক ব্যবসায়ী চাল কেনাবেচা আপাতত বন্ধও রেখেছে। দেশের মোকামগুলোতে চালের দাম অনেক বাড়তি। জ¦ালানির দাম বাড়ার পর প্রতি বস্তা চালের দাম দেড়শ থেকে আড়াইশ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বিআর-২৮ চালের প্রতি বস্তার দাম সাড়ে ৩০০ টাকা বেড়েছে। আর আগামী ৩ মাসের মধ্যে চালের দাম কমার কোনো সম্ভাবনা নেই। এ সুযোগে মজুতদাররা মোটা টাকা লাভ করছে।
সূত্র আরো জানায়, মিলাররা চাহিদা অনুযায়ী বাজারে চাল সরবরাহ করছে না। ফলে প্রতিদিনই চালের দাম বাড়ছে। অথচ দেশে চালের উৎপাদন চাহিদার চেয়েও বেশি। চলতি অর্থবছরে ৪ কোটি ৪ লাখ টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। তার মধ্যে আমনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ কোটি ৫০ লাখ টন। তার বিপরীতে উৎপাদন হয়েছে ১ কোটি ৫৫ লাখ টনেরও বেশি। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫ লাখ টন বেশি পাওয়া গেছে। এত চাল উদ্বৃত্ত থাকার পরও চালের দাম বেড়েই চলেছে।
এদিকে ক্রমাগত চালের দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান জানান, সুযোগসন্ধানী ব্যবসায়ীদের ধানের কারসাজির কারণে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সাধারণ মানুষের কষ্টের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে চালের দাম নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা জরুরি। আর মোটা চালের দাম বাড়লে স্বল্প আয়ের মানুষ বেশি সমস্যায় পড়ে। এমন পরিস্থিতি যতো দ্রুত সম্ভব এ বিষয়ে সরকারের কড়া নজরদারি দরকার।
অন্যদিকে বাংলাদেশ অটো রাইস মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ কে এম খোরশেদ আলম খান জানান, বেসরকারিভাবে কার কাছে কত ধান মজুত আছে ওই তথ্য বের করতেই হবে। কোথায় ধান মজুত আছে এবং কেন আছে তা সরকার সংশ্লিষ্টদের দেখতে হবে। তাহলেই চালের দাম কেন বাড়ছে তার কারণ জানা যাবে।
এ প্রসঙ্গে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাজার তদারকি সংস্থা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার জানান, কয়েক বছরের চেয়ে বাজারে চালের দাম অনেক বেশি। দাম বৃদ্ধি যদি ধান মজুতের কারণে হয় তবে তা বন্ধ করতে অধিদপ্তরের একাধিক দল কাজ করছে। কোনো অসঙ্গতি থাকলে অসাধুদের বের করে শাস্তির আওতায় আনা হবে।
এ প্রসঙ্গে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার গণমাধ্যমকে জানান, সরকারের নিয়ম অনুযায়ী মিলাররা ধান ৩০ দিন ও চাল ১৫ দিনের বেশি মজুত রাখতে পারবে না। যারা অবৈধ মজুত করে চালের দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। পর্যাপ্ত উৎপাদন আছে, সরবরাহ আছে অথচ চালের দাম বাড়ছে। ধানের যদি ঘাটতি থাকতো তাহলে আমদানি করে তা পুষিয়ে নেয়া হতো। আমদানির লাইসেন্স দেওয়ার পরও ব্যবসায়ীরা আমদানি করেনি। তাতেই সবকিছু স্পষ্ট। প্রতি সপ্তাহে চালের দাম বাড়ানো কোনোভাবে মেনে নেয়া হবে না।

Array
We use all content from others website just for demo purpose. We suggest to remove all content after building your demo website. And Dont copy our content without our permission.
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
Jugantor Logo
ফজর ৫:০৫
জোহর ১১:৪৬
আসর ৪:০৮
মাগরিব ৫:১১
ইশা ৬:২৬
সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১