• ঢাকা, বাংলাদেশ

মুজিববর্ষে ১৭০ মডেল মসজিদ চালু হবে 

 admin 
03rd Feb 2021 11:23 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

দেশের প্রতি জেলা ও উপজেলায় দৃষ্টিনন্দন ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ করছে সরকার। এর মধ্যে মুজিববর্ষে ১৭০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধন করা হবে।

এই প্রকল্পের আওতায় দেশের প্রতিটি জেলা সদর ও উপজেলায় একটি করে মডেল মসজিদ ও ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র তৈরি করা হচ্ছে।
প্রকল্প পরিচালক মো. নজিবুর রহমান বলেন, এটাই হচ্ছে বিশ্বে প্রথম কোনো সরকারের একই সময়ে এত বিপুল সংখ্যক মসজিদ নির্মাণের ঘটনা।
ইসলামের ভ্রাতৃত্ব ও মূল্যবোধের প্রচার এবং উগ্রবাদ ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ইসলামের ‘প্রকৃত মর্মবাণী’ প্রচার করার লক্ষ্যেই এই প্রকল্প নেওয়া হয়েছে বল জানান তিনি।
তিনি বলেন, আগামী এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫০টি মডেল মসজিদ উদ্বোধন করবেন। সেপ্টেম্বরে ৬০টি এবং মুজিববর্ষের শেষ ভাগে ডিসেম্বর মাসে আরো ৬০টি মডেল মসজিদ উদ্বোধন করা হবে।
নজিবর রহমান বলেন, প্রকল্পের মোট কাজের ৩২ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে। আগামী দুই বছরের মধ্যে ৫৬০টি মডেল মসজিদের সবগুলোর কাজ সম্পন্ন হবে।
যে কাঠামোয় নির্মিত হচ্ছে মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র
৪০ শতাংশ জায়গার ওপর তিন ক্যাটাগরিতে মসজিদগুলো নির্মিত হচ্ছে। জেলা পর্যায়ে চারতলা, উপজেলার জন্য তিনতলা এবং উপকূলীয় এলাকায় চারতলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে।
এ-ক্যাটাগরিতে ৬৪টি জেলা শহরে এবং সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ৬৯টি চারতলা বিশিষ্ট মডেল মসজিদ নির্মিত হচ্ছে। এই মসজিদগুলোর প্রতি ফ্লোরের আয়তন হচ্ছে ২ হাজার ৩৬০ দশমিক ০৯ বর্গমিটার।
বি-ক্যাটাগরিতে উপজেলা পর্যায়ে ৪৭৫টি মডেল মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে। এগুলোর প্রতি ফ্লোরের আয়তন ১ হাজার ৬৮০ দশমিক ১৪ বর্গমিটার।
সি-ক্যাটাগরিতে উপকূলীয় এলাকায় ১৬টি মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে। এগুলোর প্রতি ফ্লোরের আয়তন হচ্ছে ২ হাজার ৫২ দশমিক ১২ বর্গমিটার। উপকূলীয় এলাকার মসজিদগুলোতে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে নিচ তলা ফাঁকা থাকবে।
মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ব্যয়
একেকটি মসজিদ নির্মাণ করতে ব্যয় হচ্ছে জেলা শহর ও সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ১৫ কোটি ৬১ লাখ ৮১ হাজার টাকা; উপজেলা পর্যায়ে ১৩ কোটি ৪১ লাখ ৮০ হাজার টাকা এবং উপকূলীয় এলাকায় ১৩ কোটি ৬০ লাখ ৮২ হাজার টাকা।
জেলা সদর ও সিটি কর্পোরেশন এলাকায় নির্মাণাধীন মসজিদগুলোতে একসঙ্গে এক হাজার ২০০ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন। উপজেলা ও উপকূলীয় এলাকার মডেল মসজিদগুলোতে একসঙ্গে ৯০০ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন।
মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে থাকবে যেসব সুবিধা
আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত সুবিশাল এসব মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে নারী ও পুরুষদের আলাদা অজু ও নামাজ আদায়ের সুবিধা, লাইব্রেরি, গবেষণা কেন্দ্র, ইসলামিক বই বিক্রয় কেন্দ্র, পবিত্র কুরআন হেফজ বিভাগ, শিশু শিক্ষা, অতিথিশালা, বিদেশি পর্যটকদের আবাসন, মৃতদেহ গোসলের ব্যবস্থা, হজযাত্রীদের নিবন্ধন ও প্রশিক্ষণ, ইমামদের প্রশিক্ষণ, অটিজম কেন্দ্র, গণশিক্ষা কেন্দ্র, ইসলামি সংস্কৃতি কেন্দ্র থাকবে।
এছাড়া ইমাম-মুয়াজ্জিনের আবাসনসহ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য অফিসের ব্যবস্থা এবং গাড়ি পার্কিংয়ের সুবিধা রাখা হয়েছে।
মডেল মসজিদগুলোতে দ্বীনি দাওয়া কার্যক্রম ও ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার পাশাপাশি মাদক, সন্ত্রাস, যৌতুক, নারীর প্রতি সহিংসতাসহ বিভিন্ন সামাজিক ব্যাধি রোধে সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
প্রকল্প পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মো. নজিবর রহমান বলেন, মডেল মসজিদগুলো শুধু নামাজ পড়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না, এখানে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার পাশাপাশি জ্ঞান অর্জন ও গবেষণা সুযোগ ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকবে।
৫৬০টি মডেল মসজিদে সারাদেশে প্রতিদিন ৪ লাখ ৯৪ হাজার ২০০ জন পুরুষ ও ৩১ হাজার ৪০০ জন নারী একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবেন।
মডেল মসজিদে থাকবে মাদরাসার সুযোগ-সুবিধা
লাইব্রেরি সুবিধার আওতায় প্রতিদিন ৩৪ হাজার পাঠক একসঙ্গে কোরআন ও ইসলামিক বই পড়তে পারবেন। ইসলামিক বিষয়ে গবেষণার সুযোগ থাকবে ৬ হাজার ৮০০ জনের। ৫৬ হাজার মুসল্লি সব সময় দোয়া, মোনাজাতসহ তসবিহ পড়তে পারবেন।
মসজিদগুলো থেকে প্রতি বছর ১৪ হাজার হাফেজ তৈরির ব্যবস্থা থাকবে। আরো থাকবে ইসলামিক নানা বিষয়সহ প্রতিবছর ১ লাখ ৬৮ হাজার শিশুর প্রাথমিক শিক্ষার ব্যবস্থা। এ প্রকল্পের আওতায় ২ হাজার ২৪০ জন দেশি-বিদেশি অতিথির আবাসন ব্যবস্থাও গড়ে তোলা হবে। কেন্দ্রগুলোতে পবিত্র হজ পালনের জন্য ডিজিটাল নিবন্ধনের ব্যবস্থা থাকবে।
রংপুরের গঙ্গাছড়া নিউ স্টার পাড়া জামে মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, মসজিদ শুধু নামাজ পড়ার জন্য নয়। ইসলাম ধর্মকে মসজিদে বন্দি না রেখে এর সুমহান আদর্শ সমাজে ছড়িয়ে দিতে হবে।
তিনি আরো বলেন, মানুষ যখন ইসলামের সঠিক জ্ঞান পাবে তখন কেউ আর মাদক, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত হবে না। যৌতুক-নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ হবে, মানুষ অন্যায় থেকে দূরে থাকবে। এক্ষেত্রে মডেল মসজিদগুলোর সঠিক ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
আসাদুজ্জামান বলেন, মডেল মসজিদ নির্মাণ করায় আমরা খুশি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করি তিনি যেন ধর্মীয় কাজগুলো বেশি বেশি করতে পারেন।
নীলফামারী সদরের বায়তুল আমান জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, মসজিদ হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। সামাজিক অবক্ষয় ও অন্যায়-কুসংস্কারের বিরুদ্ধে মানুষকে সচেতন করতে মসজিদগুলো সবচেয়ে বেশি অবদান রাখতে পারে।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে উন্নত মসজিদ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণে আট হাজার ৭২২ কোটি টাকা ব্যয়ে মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ করছে সরকার।
Array
We use all content from others website just for demo purpose. We suggest to remove all content after building your demo website. And Dont copy our content without our permission.
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
এই বিভাগের আরও খবর
 
Jugantor Logo
ফজর ৫:০৫
জোহর ১১:৪৬
আসর ৪:০৮
মাগরিব ৫:১১
ইশা ৬:২৬
সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১