• ঢাকা, বাংলাদেশ

শিশুদের শতভাগ ডেল্টায় আক্রান্ত 

 admin 
20th Jul 2021 11:40 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্ত শিশুদের শতভাগই ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত। আক্রান্ত শিশুদের ৮০ ভাগেরই বয়স ১০ বছরের নিচে। সর্বনিম্ন আট মাস বয়সের শিশুর মাঝেও এই ভ্যারিয়েন্ট চিহ্নিত হয়েছে। জুন থেকে জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত আক্রান্ত শিশুদের নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সে এ তথ্য পেয়েছেন গবেষকরা।

গত শনিবার  জার্মানি থেকে প্রকাশিত ভাইরাসের আন্তর্জাতিক তথ্যভাণ্ডার সংস্থা গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জা ডেটাতে (জিআইএসএআইডি) এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।

চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল এবং চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে  আসা ও ভর্তি হওয়া ১২টি  শিশুর নমুনা পরীক্ষা করে এ তথ্য পেয়েছেন গবেষকরা। গবেষকরা জানান, গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত করা হয় নবজাতক থেকে ১৬ বছর বয়সী (স্কুলগামী) করোনা এ আক্রান্ত শিশুদের।

গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, প্রাপ্তবয়স্ক করোনা রোগীদের মধ্যে ৮০ ভাগ রোগী পুরুষ হলেও শিশুদের ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম দেখা যাচ্ছে। মেয়ে শিশুরাও সমানভাবে এই ভ্যারিয়েন্টে সংক্রমিত ও আক্রান্ত হচ্ছে। ৫০ ভাগ ছেলে শিশু এবং ৫০ ভাগ মেয়ে শিশুর মধ্যে এই ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি দেখা গেছে। ৯৫ ভাগ শিশুর মধ্যেই জ্বরের লক্ষণ এবং ৭০ ভাগ শিশুর সর্দি ও কাশি ছিল। একজন শিশু পুরোপুরি উপসর্গহীন ছিল।

এই গবেষণায় নেতৃত্ব দেন চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. এইচ এম হামিদুল্লাহ মেহেদী ও ডা. আব্দুর রব মাসুম এবং চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের চিকিৎসক ও অধ্যাপক ডা. সঞ্জয় কান্তি বিশ্বাস ও ডা. নাহিদ সুলতানা।

গবেষণায় নেতৃত্ব প্রদানকারী চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের ডা. হামিদুল্লাহ মেহেদী এ প্রসঙ্গে বলেন, আমাদের গত চার মাসের পর্যবেক্ষণে দেখা যাচ্ছে, চট্টগ্রামে আলফা ও বিটা ভ্যারিয়েন্টের প্রকোপ ছিল মে মাস পর্যন্ত। কিন্তু জুন থেকে সেখানে  ৯০ ভাগ রোগীর মাঝেই ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট দেখা যাচ্ছে। এই পরিবর্তনের সবচেয়ে উদ্বেগজনক দিক হচ্ছে—শিশুদের মাঝে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যাওয়া।

গবেষক দলের অন্যতম সদস্য ডা. সঞ্জয় কান্তি বিশ্বাস বলেন, গত এক বছরে আমরা তেমন উল্লেখযোগ্য হারে শিশুদের মাঝে কোভিড-১৯ দেখতে পাইনি। কিন্তু গত জুন মাস থেকে আক্রান্তের সংখ্যা ও তীব্রতা বেড়ে গেছে। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের কারণেই এমনটি হচ্ছে বলে আমাদের গবেষণায় পরিলক্ষিত হচ্ছে। ছোট শিশুরা নিজের অনুভূতি কিংবা দুর্বলতা প্রকাশ করতে না পারায়, অনেকেই কোভিড টেস্ট বা শনাক্তকরণের আওতায় আসবে না, যা চিন্তার বিষয়ও বটে।’

চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটের প্রধান ডা. আব্দুর রব মাসুম বলেন, ‘শিশুদের মাঝে কোভিড হওয়ার মাত্রা বেড়ে যাওয়া অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়। এই ক্ষেত্রে শিশুদের জন্য বিশেষায়িত নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের প্রয়োজন বেড়ে যেতে পারে সামনের দিনগুলোতে। পরিবারের সবাইকে অনেক বেশি সতর্ক থাকতে হবে শিশুদের স্বার্থে।

উল্লেখ্য, গত এপ্রিল মাস থেকে এই গবেষক দল চট্টগ্রামের বিভিন্ন পর্যায়ের কোভিড-১৯ রোগীদের জিনোমিক সার্ভিলেন্স বা নিয়মিত জিনোমিক বৈশিষ্ট্য ও শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তন পর্যবেক্ষণের কাজ করছেন। গবেষণায় সার্বিক সহযোগিতায় আছে চট্টগ্রামের ডিজিজ বায়োলজি অ্যান্ড মলিকুলার এপিডেমিওলজি রিসার্চ গ্রুপ।

গবেষণায় সার্বিক পরিকল্পনায় ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের শিক্ষক ড. আদনান মান্নান। গবেষক দলে আরো  ছিলেন—চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মো. মিনহাজুল হক, ডা. রাজদীপ বিশ্বাস ও ডা. একরাম হোসেন এবং চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের ডা. ফাহিম হাসান রেজা। জিনোম সিকুয়েন্সিং এর তত্ত্বাবধানে ছিল আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি)-র ভাইরোলজি বিভাগের গবেষক দল, যার নেতৃত্বে ছিলেন বিজ্ঞানী ড. মুস্তাফিজুর রহমান এবং ড. মোহাম্মদ এনায়েত হোসেন।

Array
We use all content from others website just for demo purpose. We suggest to remove all content after building your demo website. And Dont copy our content without our permission.
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
Jugantor Logo
ফজর ৫:০৫
জোহর ১১:৪৬
আসর ৪:০৮
মাগরিব ৫:১১
ইশা ৬:২৬
সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১