• ঢাকা, বাংলাদেশ

সাগরে ডুবন্ত গনতন্ত্র উদ্ধার করতে একটি স্বাধীন ও মেরুদণ্ডধারী নির্বাচন কমিশন দরকার—–মিজানুর রহমান মিরু শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক জাতীয় পার্টি। 

 admin 
07th Jan 2022 1:56 am  |  অনলাইন সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদন: গতকাল নির্বাচনী সহিংসতায় ১০ জন্ নিহত, শতাধিক আহত, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের মধ্যে দিয়ে শেষ হলো পঞ্চম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদের সাধের  নির্বাচন। ৬০/৭০ জনের জীবনের বিনিময়ে এ নির্বাচনে এখন পর্যন্ত ৪৫০ জনের মতো  বিনা ভোটে চেয়ারম্যান হয়েছেন। বিএনপি নির্বাচন বয়কট করার কারনে আওয়ামী লীগ এর মুল প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ, অর্থাৎ বিদ্রোহী প্রার্থী। বিদ্রোহী প্রার্থী হলেও তাদের পকেট ভরা টাকা, পেশি শক্তি এবং দলের হাইকমান্ডের কারো না কারোর সহযোগিতা থাকায় নৌকা প্রতীকের  প্রার্থীকে জিতে আসতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। সয়ং প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া মনোনয়ন প্রাপ্ত অনেকেই নৌকা প্রতীকে জামানত হারাচ্ছে। উৎসব ও আমেজের নির্বাচন আজ উৎকন্ঠা, হুমকি এবং চর দখলের ন্যায় কেন্দ্র দখলের কারণে ভোটারদের নির্বাচন কিংবা ভোটদানের কোন রকম আগ্রহ নেই বললেই চলে। এরইমধ্যে সরকার দলীয় সংসদ, আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতাদের নতুন নতুন শ্লোগানে মুখরিত বর্তমান নির্বাচনের পরিবেশ। গত ২৫শে ডিসেম্বর দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় সম্পাদকীয় পাতায় গনতান্ত্রিক সরকারের নেতাদের মুখে স্বৈরতান্ত্রিক সেই শ্লোগান কিছুটা বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।

পাবনা-১ আসনের সাংসদ শামসুল হক সাহেব তার প্রতিপক্ষ কে হুমকি দিয়ে বলেছেন, কোন দয়ামায়া না করে পিষে মেরে ফেলা হোক।

সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সাংসদ হাসিনা দৌলা নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে দাড়ানো বিদ্রোহী প্রার্থীদের হাত-পা ভেঙে ফেলতে বলেছেন।

মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও গাংনী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক ভোট কেন্দ্র দখল করে প্রকাশ্যে একবারের জায়গায় প্রয়োজনে তিনবার সীল মারতে বলেছেন।

রাজশাহী বাগমারা উপজেলার সাধারণ সম্পাদক গোলাম সারোয়ার আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে ভোট না দিলে হিন্দুদের উচিৎ শিক্ষা দেওয়ার ঘোষণা দেন।

লক্ষীপুরের এক আওয়ামী লীগ নেতা নৌকা প্রার্থীর বিরুদ্ধে স্টাটাস দিলে ধরে এনে ক্রসফায়ারের হুমকি দিয়েছেন। আরেক নেতা বলেছেন নৌকায় ভোট না দিলে কেন্দ্রে যাওয়ার কোন প্রয়োজন নেই।

চট্টগ্রাম -৮ আসনের সাংসদ ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি মুসলিম উদ্দিন বলেছেন ভোটের দিন আমি থাকবো, কার কতটি কেশ আছে আমি দেখে নেব।

এরকম আরো অনেক হুমকি ধামকীর ‘অমিয় বানী’ আমরা দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার মাধ্যমে জেনেছি, পড়েছি এবং শুনেছি। সম্পাদক সাহেব তার আংশিক এখানে উল্লেখ করেছেন মাত্র।

আইয়ুব আমলে স্পীকার ছিলেন ফজলুল কাদের চৌধুরী। তিনি মুসলিম লীগের নেতা ছিলেন। তার এলাকায় তখন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অনেক লোক বসবাস করতেন। যাহারা সাম্প্রদায়িক রাজনীতি পছন্দ করতেন না। বিষয়টি বুঝতে পেরে ফজলুল কাদের চৌধুরী সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ে নেতা এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের সাথে বৈঠকে বসে তার উন্নয়নের ফিরিস্তি তুলে ধরলেন। তারপর চৌধুরী সাহেব বললেন এতো উন্নয়নের পরেও কি আমি আপনাদের ভোট আশা করতে পারি না। সমস্বরে সকলেই বললেন, অবশ্যই ভোট পেতে পারেন, আমরাতো আপনাকেই ভোট দিবো। চৌধুরী সাহেব বললেন ধন্যবাদ, আমি আপনাদের ভোট তাহলে পেয়ে গিয়েছি, আপনাদের কষ্ট করে ভোট কেন্দ্রে যেতে হবে না। আমার কর্মীরা আপনাদের ভোট দিয়ে দিবে। স্বাধীনতার আগে মুসলিম লীগের নেতা সেদিন শুধু মাত্র হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদের ভোট হরণ করলেও এখন সকল জনগোষ্ঠীর ভোটাধিকার হরণ করা হচ্ছে। অথচ আজ স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী এবং মুজিব জন্মশতবার্ষিকী বছরে শুরু হওয়া  ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় চেয়ারম্যান হচ্ছে, ভোট কেন্দ্র দখল হচ্ছে, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের প্রকাশ্যে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। রাজনৈতিক এবং শিক্ষিত ও যোগ্য লোকেরা আজ নির্বাচনে আসতে ভয় পাচ্ছে। নিরপেক্ষ নির্বাচন এখন রুপকথার গল্পে পরিনত হয়েছে। আনন্দ, উৎসবের জায়গায় আজ নির্বাচনের মাঠে বিষাদের করুণ সুর বাজছে । এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার একমাত্র উপায় হচ্ছে একটি স্বাধীন ও মেরুদণ্ডধারী নির্বাচন কমিশন। তারাই পারে সাগরে ডুবন্ত গনতন্ত্রকে রক্ষা ও উদ্ধার করতে।

Array
We use all content from others website just for demo purpose. We suggest to remove all content after building your demo website. And Dont copy our content without our permission.
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
এই বিভাগের আরও খবর
 
Jugantor Logo
ফজর ৫:০৫
জোহর ১১:৪৬
আসর ৪:০৮
মাগরিব ৫:১১
ইশা ৬:২৬
সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১